যুগের সাহিত্য zugersahitto

 








❑ শনিবার  ❑ ২৭ আগস্ট ২০২৩ ইংরেজি  ❑ ১২ ভাদ্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ❑ ঢাকা।


❑ 

স্মৃতিরপদচারণ 

 গোলাপ মাহমুদ সৌরভ 


স্মৃতিরাও আজ দেয়ালে ঝুলে রয়

নিস্তব্ধ ছবি হয়ে বন্দী ফ্রেমের মাঝে 

কখনো আবার পুরনো ডাইরির পাতায় 

স্মৃতিরা বিরাজ করে মনের বারান্দায়। 

মাঝে মাঝে চলার পথে হঠাৎ অজান্তে

যেখানে কোন একদিন সময় কেটেছিল  

কোন পড়ন্ত বিকেলে পুকুর পাড়ে এসে

পুরনো স্মৃতিতে মন আবেগে ভাসে। 

স্মৃতির শহরে ফেরারি মনের আর্তনাদ 

কেই-বা বুঝে অহেতুক স্মৃতিরপদচারণ

যাকে ঘিরে স্মৃতিচারণ সেযে বহুদূরে

আপ্লূত হৃদয়ে বেদনার সুর স্মৃতি কুড়ে। 

নাটকের ওই রঙ্গমঞ্চে মিথ্যে অভিনয়

স্মৃতিরা অবলীলায় মস্তিষ্কে রক্ত ঝরায়

তবুও যেন চোখের পাতা স্মৃতি গুলো 

অমৃত সুখ গুলো তারে খুঁজে বেড়ায়।

❑❑

তৃপ্তি ও সুখ

এবি ছিদ্দিক 


তুমি তোমার পরিণতির কথা আঁচ করো

সন্তান জন্মদানের মহতী উৎসব রহস্যাবৃত 

আমরা বলি- প্রেম কিম্বা ভালোবাসার স্মারক 

দেহজ তৃপ্তি তো প্রাণী মাত্রই আয়ত্ত্ব করে ফেলে


অনাবিল সুখের ঠিকানা অনাবৃত কর

তৃপ্তি ও সুখ খুঁজে পাবে

নির্বুদ্ধিতার পাঁকে পা দিও না

তাহলে চুম্বন ও সঙ্গমান্তে যাতনা থাকবে

❑❑

আদরের  রাসেল 

নাসরীন খান আদরের


দূরন্ত শৈশব, বাঁধাহীন ভালোবাসা,

বাবার প্রিয় আদরের মানিক!

হৃদয়ের উৎসারিত আবেগ 

ছুঁয়ে থাকা ছোট্ট হাতের স্পর্শ। 

বাবাকে বুঝতে শিখেছে একটু একটু 

বাবা বাঙালীর প্রাণ,বাবা একটি 

মানচিত্র! 

পৃথিবীর ইতিহাস যিনি। 

কচি মনে আঁকিবুঁকির বিস্তারে

যে টুকু দেখে জনতার আগমনে

ড্রয়িংরুমে আলাপচারিতায়

বাবার কোলে বসে

সবটুকু হয়ত বুঝতে পারেনি বাবাকে।

যে বুক তাকে আগলে রাখত

পরম মমতা জড়িয়ে 

যে বুক আগলে রাখত  

সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে।

হায়রে!  সীমার বিদ্ধ করলো

সেই বুকের পাঁজর, 

হায়েনার মতন মাংসাশী প্রাণীগুলো 

থামেনি তাতে

 ছোট্ট অবুঝ শিশু রাসেল!

সে কি বুঝে রাজনীতি, ষড়যন্ত্র? 

ওকেও বলি হতে হলো

পাষাণ কুকুরের কামড়ে।

বিভৎস নির্মমতায়

হারিয়ে গেল সেই হাসি চিরতরে। 

বুলেটের আঘাত রাসেলের  শরীরে

রক্তে ভিজে গেল বাংলাদেশ 

ভিজে গেল কোটি বাঙালির চোখ।

আজো দাগ কাটে কোটি হৃদয়ে 

এই নামটি বাবার মতন ইতিহাস হয়ে।।

❑❑

যৌক্তিক বলে কিছু নেই

    রফিকুল ইসলাম


রোদ্র আর মেঘজল বিদ্রোহ মিছিল প্রতিরোধ

কালোত্তীর্ণ  সীমাহীন শোক—

রোদে পুড়ছে মেঘেদের সজল চোখ। 

অস্থির সময়— যৌক্তিক বলে কিছু নেই 

প্রবাহমান স্রোতে চিরকাল—

মিথ্যা প্রলাপে শুদ্ধচারী প্রেম হারিয়েছে খেই। 

ভোর হলে রাজপথে আর যায় না দেখা 

কাকেদের তুমুল বিবাদ, 

জলের অভাবে এখন দূষণ বাতাস 

রাতেও সূর্য উঠে রাস্তায় হাঁটে বিদগ্ধ উন্মাদ। 

আধাশত শ্রাবণ সিগারেটের ছাইয়ের মতো 

পুড়ে গেছে হিংসার দাপটে, 

রাতগুলো ঝলসে গেছে ঝাঁঝালো দুপুরের মতো 

মাতৃহীন হাঁসের ছানাগুলো অপেক্ষায় থাকে 

অভিশপ্ত জলশূন্য ফুরাতের ঘাটে। 

আষাঢ় গেছে শ্রাবণ উত্তরিত আকাশ 

আগুন জ্বালিয়ে দখল নিয়েছে উত্তাপ 

মায়ের জরায়ু ছিঁড়ে শুকিয়েছে রক্তের স্রোত

শুষ্ক নদীও হারিয়েছে পথ—এ কোন অভিশাপ!

❑❑

বিবেক

জিৎ মন্ডল 


 এবার তুমি মানুষের পাশে দাঁড়াও 

 তোমাকেই বড় প্রয়োজন, 

তোমাকে ছাড়া রুদ্ধ সবার হৃদয় 

 বৃথা যত আয়োজন। 


শকুনের মতো রক্ত চাইছে ওরা

কসাইয়ের মতো কাটছে মানুষ, 

চারপাশে ক্রমাগত চলছে হাহাকার 

ফিরছেনা তবু কারো হুঁশ।

স্বপ্ন প্রহর 

নিপুন দাস



ভালোবাসার স্বপ্নের পরিধি ঠিক কতটুকু- জানা নেই,

তবে স্বপ্নেরা ডানা বাঁধে কল্পলোকের জগতে,

যেখানে কোন স্বপ্নের সীমা নেই ;

দু'টি হৃদয় দূর থেকে বহুদূরে

তবুও স্বপ্ন যেন এক, 

সুপ্ত বাসনা গুলো একে একে প্রকাশ পায় কথার আড়ালে, 

ভালোবাসার ফাল্গুন ছড়ায় চঞ্চলা ঝর্ণার ধারা।


কতনা কল্পকাহিনী বুনে চলে মনের গহীন আনমনে

সবকিছুই যেন ভরে থাকে প্রেমের মধুর মায়াবী ঘ্রাণে

কত অভিমান কত আহ্লাদ মনের দ্বারে উঁকি দেয়, 

প্রভাতের রেশ যখন ছড়িয়ে পড়ে আঙিনার চারিপাশে,

স্বপ্নেরা বিদায় নেয় একে একে শূন্য করে চোখের পাতা,

অবশেষে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছুই থাকে না বাকি,

নব প্রভাতের আলোয় নিজেকে আবার সতেজ করে, 

অধীর অপেক্ষায় আবারও অপলক সেই স্বপ্ন প্রহরের আশায়।

তবুও কি মিষ্টি সে অপেক্ষা!


❑❑

একটা সুস্থ পৃখিবী চাই


নাদিরা বেগম


আমাাকে একটা সুস্থ পৃথিবী দাও

থাকবেনা যেখানে সন্ত্রাস খুন রাহাজানি

ধর্ষিতা নারীর ক্রন্দন ;পতিতার কারাবাস । 

আমি নি:শ্বাস নিবো নির্মল বাতাসে

খোলা আকাশ তলে সোনাঝরা সকালে

সাজ বেলার শান্ত স্নিগ্ধ দখীনা বাতাসে

 চাঁদের আলোয়  জোৎস্নার প্লাবনে । 

আমাকে একটা মুক্ত জীবন দাও

আমি উড়ে বেড়াতে চাই মুক্ত বিহঙ্গে

আমি চাই হাসি খুশী ভরা জীবন

মায়ের বুকে মাথা রেখে আমি ঘুমাই

বাবার শক্ত হাতটা ধরে ঘুরে বেড়াই 

ভাই বোনের খুনসুটির মজা কুঁড়াই। 

আমাকে বাঁচতে দাও আমার মত করে

 হুকুমের দাসত্বে শ্রীঙ্খলে বন্দী হয়ে নয়

ব্যবসার পন্য হিসাবে বিক্রিত হয়ে নয়

ট্রামে বাসে ধর্ষিতা হয়ে জলে ডুবে নয়

কীট পতঙ্গের খাওয়া পতীতা হয়ে নয়

পূর্ণ স্বাধীন মুক্ত জীবনে বাঁচতে দাও। 

❑❑

না দেখা স্পর্শ লাগুক 

-সোহাগ রেজা 


এমন একটা সকাল আসুক 

দূর্বা ঘাসের ডগায় 

নগ্ন পায়ের কোমল ছোঁয়ায় 

শিশিরের ঘুম ভাঙ্গুক; 

নূপুরের ধ্বনিতে ছন্দ থাকুক 

না দেখা স্পর্শ লাগুক 

মনকাড়া হাসিতে হৃদয় হাসুক 

আলতো পরশ বুলিয়ে যাক 

মেঘেরা নীলাকাশে মনখুলে গল্প করুক 

মায়াভরা টানে খুব নীরবে সে ছুটে আসুক 

তীব্র আকাঙ্ক্ষায় সীমাহীন ইচ্ছে জাগুক 

প্রস্ফুটিত ফুলের কোলে ভ্রমরের আগমন ঘটুক 

মনের গহিনে মন তৃপ্তি ভরে ডুবে যাক! 

অধর কেঁপে-কেঁপে কিছুতো বলুক! 

বিষাদ 

আনজানা ডালিয়া


তোমার খেলাঘর জমে উঠেছে দেখলাম

দুরত্ব সীমার পাড়ে লিখে রাখছি গল্প

তোমার গন্ধ খুঁজে চলেছি ফুলেদের গায়ে

একের পর এক কানাগলি পেরিয়ে ছুটে যাচ্ছো অন্ধকারের দিকে

মুঠো ভরে তুলে রাখছি ডান বুক পকেটে বিষাদের স্বাদ

আর কখনও দেখা হলে বুক চিড়ে দেখাবো বিষাদ,

চারা গজিয়েছে ওখানে।

বেড়েও উঠছে।

আর সুখগুলো পবিত্র শব্দে আটকে আছে অদ্ভুত এক সীমান্ত রেখায়।  

শরৎকাল

কাজী আলম ভূঁঞা 


গ্রীষ্মের পরে বর্ষা গেল

শরৎ পেল স্থান, 

শরৎকালের রং ছিটিয়ে 

পাকা তালের ঘ্রাণ। 


শিউলি ফুলের সুগন্ধে আজ 

কৃষ্ণচূড়া ও হাসে, 

আকাশ জুড়ে দেখতে পেলাম

নীল শাড়িতে ভাসে।


সাদা বকের উড়াল দেখে

পুটি মাছের নাচানাচি,

জেলের সাথে মাছের খেলা 

কাচকি মাছের ভাজি। 


সবুজ গাছে শিশির ভেজা 

ফুটছে কত ফুল, 

শরৎ মানেই রূপের রাণী 

এই কথাটাই মূল।


শরৎ নিয়ে কবির খেলা

পল্লীগায়ে মেলা,

হাসি-কান্নার রোদ বৃষ্টিতে

যায় যে সবার বেলা।

❑❑

প্রেতাত্মাদের হ্যাকার 

মেশকাতুন নাহার 


মন-মেজাজ বিগড়ে আছে;পাগলা বাজারটায়

টাকা -পয়সা উপার্জন যা;সামগ্রী মেলানো  দায়।

পেঁয়াজ-রসুন কি যে কিনব!চিন্তায় মরি ভাই,

আকাশ -ছোঁয়া দামটা শুনে অবাক হয়ে যাই!


হাট-বাজার ঘুরে দেখি;দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতি,

গরিব-কাঙাল মধ্যবিত্তের ব্যয় হচ্ছে বাড়তি। 

রাত-দিন তফাত হয়েছে যে;ডিম চিনির দাম,

খাবার -দাবার কিনছে লোক কিছু সামান্য গ্রাম।


সন্তান-সন্ততি বায়না ধরে কত কিছুই রোজ

মাছ-মাংস ইলিশ - পোলাও করবেই তাঁরা ভোজ।

কথা-বার্তা শুনে তাদের কেঁদে ওঠে মনের কোন,

ঢং-ঢং শব্দে বাজে ব্যথায় জমা বুকের স্টোন।


ভালো-মন্দ খাওয়ার সুযোগ;আছে কি বলো আর?

ফল-মূল মণ্ডা-মিঠাই, উপায় নাই যে ছোঁয়ার। 

ছোট-খাটো সংসারেও চলছে নিরব হাহাকার, 

সুখ-শান্তি উধাও করলো প্রেতাত্মাদের হ্যাকার।


❑❑


শরৎ

ইলিয়াছ হোসেন


এই বাংলায় এসেছে শরৎ

ভাদ্র আশ্বিন নিয়ে,

মনের মাঝে খুশির ঝিলিক

কাশবনে গিয়ে।


বিলের জলের পদ্ম শাপলা

বাড়িয়েছে শোভা,

মিষ্টি লাগছে নীল আকাশের

ভোরের রবির প্রভা।


মাঠে মাঠে সবুজ ধানে

চাষির মুখে হাসি,

পাকা তালের পিঠা খেতে

বড্ড ভালোবাসি।


শিউলি বেলি দোলনচাঁপার

গন্ধে ভরছে মন,

প্রজাপতি পাখনা মেলে

উড়ছে সর্বক্ষণ।


কী অপরূপ প্রকৃতির রূপ

চোখ ফেরানো দায়!

শরৎ রানির শোভা দেখতে

মন সতত চায়।



❑❑

রঙ্গন ফুটেছে

কলমেঃ নূর মোহাম্মদ 


আষাঢ়ে ফুটেছে কেয়া কদম

রঙ্গন ফুটেছে ডালে

ঝর ঝর ঝর বৃষ্টি পরে

ফিঙে নাচে তালে।


ব্যাঙ ডাকেনা  নির্ঘুম বৃষ্টিতে

ঝিঁঝিঁ ডাকেনা রাতে

বৈচিত্র্যময় এই ধরনীর 

মিতালি নেই কারো সাথে।


নিরবে ফুটেছে রঙ্গন ডালে

চুপি চুপি বসে অলি

ঝাঁপি মাথায় নেই, চাষ করে চাষি

গিয়েছে সকলে ভুলি।


❑❑

রটনা

সাঈদুর রহমান লিটন


আঁকাবাঁকা পাকা পথে

ঝাঁকাঝাঁকি কম না

ঠেলাগাড়ি খেলাগাড়ি

পাকা পথে যম না!


দাপাদাপি হাঁপাহাঁপি

গাড়ি চালায় ড্রাইভার,

জানপ্রাণ খানখান

নেয় নাতো দায়ভার।


রোজ রোজ প্রতিরোজ

ঘটে যায় ঘটনা,

পড়িমরি রোজ মরে

তারা বলে রটনা।


❑❑

  রাজাবহুরূপী

রুশো আরভি নয়ন


কতো রাজা এলো গেলো

কতো রাজা আসবে,

ক্ষমতাকে পুঁজি করে

কালো স্রোতে ভাসবে।


কতো রাজা দেশটাকে

রসাতলে নিয়ে যায়,

চাটুকের জাত এরা

সহমত বলে তাই।


কতো রাজা অবিচারে

থাকে তবু নিশ্চুপ,

বার বার বহুরঙে

সাজে তার ওই রূপ।


কতো রাজা প্রতিবাদে

জারি করে ধারা,

রাজপথের স্লোগানে

নেমে আসে যারা।


কতো রাজা কুশাসনে

ঝরে ঝরে পড়ে হায়,

দেশটাকে লুটেপুটে

চেটেপুটে খেয়ে যায়।


❑❑

শুভ দৃষ্টি

কাজী নাজরিন 

 

মনের অজান্তে গাঁথা সযতনে

রয়েছো বহুদূর 

অবাক নয়নে মুক্তমনে

বাজে করুন সুর।

শিউলি ফুলের সুবাস ছড়ানো

চৈতি মেয়ের চুল

বকুল ফুলের মালা হয়ে 

মাথায় জোটে ফুল।

হোক না শত জুট ঝামেলা 

আসুক তুফান বৃষ্টি 

আনমনে মুক্ত নয়নে

অবিরাম শুভ দৃষ্টি।

❑❑

দ্রোহী ফুল নজরুল 

জাহাঙ্গীর চৌধুরী 


আশানশোলের চুরুলিয়ার জীর্ণ কুঁড়েঘরে,

আঠারো ঊননব্বই চব্বিশের মে'র প্রহরে, 

ফুটলো এক স্বাধীন মস্তিষ্কের দ্রোহী ফুল, 

নাম নজরুল ইসলাম বংশে কাজীর কুল।

দুখীঘরে আসায় ডাকতো সবাই দুখু মিয়া 

লেখাপড়া নগণ্য,মেধায় জঘন্য,শক্ত হিয়া।

বাঙালিকে হেরে পরাধীনতার আতুড়ঘরে,

স্বাধীনতার অনল জ্বলিয়া উঠিল সর্বান্তরে।

কোঁকড়াচুল মস্তক জাঁকি গাহি দ্রোহী গান, 

ছড়ায়েছে পরাধীন মনে স্বাধীনতার ঘ্রাণ। 

লিখেছেন দ্রোহী কাব্য নোবেল লেটুস গান,

ক্ষুরধার ভাষায় উঠেছে নিত্য দ্রোহের বান।

স্বাধীনতার দামামা দর্পে বাজিয়ে অনিবার, 

জেলের ঘানি টেনেছে অনত শিরে বহুবার। 

চৌকস সাহিত্যিক কবি গীতিকার গায়ক,

সর্বক্ষেত্রে ছিল কাজী নজরুল মহানায়ক। 

বাংলায় গড়েছে বাংলাভাষার মহাভাণ্ডার,

তিনি জাতীয় কবি তিনি বাংলার অহংকার। 

তিনি বাংলার দ্রোহী ফুল,বাংলার বুলবুল, 

তিনি নক্ষত্র জগতে অমর,তিনি চির অতুল।।


❑❑

ঋতুরানি শরৎ

মোঃ দিদারুল ইসলাম 


ঋতুর রানি শরৎ এলো

শালিক, ময়না ডাকে,

শরৎ মানেই কাশফুলেরা

হাসে নদীর বাঁকে।


ভাদ্র-আশ্বিন শরৎ ঋতু

জুঁই টগরের মেলা,

প্রকৃতিরই রূপের দোলায় 

কাটে সারা বেলা।


নীল গগনে ভেসে বেড়ায় 

সাদা মেঘের ভেলা,

মাঝে মাঝে বৃষ্টি পড়ে

বিলে ফোটে শাপলা।


গাছে গাছে পাকা তালের

মিষ্টি গন্ধ ভাসে,

তালের রসের পিঠা খেয়ে 

খোকা-খুকি হাসে।


❑❑

আমার দেশের চাষা

মাওলানা তাজুল ইসলাম নাহীদ


চাষী ভাইদের ঘাম ঝরা সেই

শ্রমের হয় না তুল্য,

এখন থেকে দিতে হবে

তাদের সঠিক মূল্য।


সব সাধকের বড় সাধক

কৃষক কেনো দুখে,

দেখতে চাহি হাসি আমরা

সদায় তাদের মুখে।


রোদ বৃষ্টিতে ভেজে ওরা

কত কষ্ট করে,

আরাম আয়েশ ভুলে গিয়ে 

ফসল উঠায় ঘরে।


তাঁদের কেনো করি হেলা 

দেখি নিচু চোখে,

দেয় না আজি প্রাপ‍্য সম্মান 

আমরা অনেক লোকে!


এই ভেদাভেদ ভুলতে হবে

দেশের চাইলে ভালো,

দূর করো ভাই জমে থাকা

মনের হিংসা কালো।


টাকলু জামাই

কনক কুমার প্রামানিক


বন্ধু মিঠুনের ঘরের সোকেসটা হাজারো রকমের দেশী বিদেশী দামী সব তেল আর শ্যাম্পুর শিশি দিয়ে ভরানো। কিন্তু সব ব্যর্থ। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। মাথার মাঝখানের টাকটা তার দিনকে দিন বেড়েই যাচ্ছে। অনেক টোটকা-ফোটকা করেও কোন লাভ হচ্ছে না। এদিকে বন্ধুদের সবার বিয়ে হয়ে গেলেও ওর বিয়ে হচ্ছে না। টাক মাথার কারণে। রাস্তা দিয়ে হাঁটলেও অনেকে অনেক কিছু বলে। এর আগে বেশ কয়েকটা বিয়ের সম্বন্ধ ভেস্তে গেছে মাথায় চুল না থাকার কারণে। মেয়েরা তাকে পছন্দ করছে না । এখন সে লজ্জায় ক্যাপ পড়ে থাকে সবসময়। কখনো খোলেনা একমাত্র ঘুমানোর সময় ছাড়া। বন্ধুদের সঙ্গে থাকলে তাকেই সবচেয়ে বেশী বয়স্ক মনে হয়। ইদানিং কোন মেয়ে ওকে পাত্তাই দেয় না। হীনমন্যতায় ভোগে সে। মিঠুন ভেবেই নিয়েছে ভালো কোন মেয়ের সাথে হয়তো তার বিয়ে হবেনা। এখন ধর্মের পথে মতি হয়েছে তার। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে । সারাক্ষণ মাথায় টুপি পড়ে থাকে। টুপি পড়ার ফলে মাথার টাকটা তার ঢাকা পড়ে। এখন কেউ দেখলে তার টাক আর দেখতে না। হঠাৎ মিঠুনের ছোট মামা একটা বিয়ের সম্বন্ধ আনলেন। মেয়ে দেখতে শুনতে খুবই ভালো। সবকিছু দেখেশুনে উভয় পক্ষের খুব পছন্দ হলো। নির্ধারিত তারিখে দুজনের বিয়েও সুসম্পন্ন হলো। ফুলশয্যার রাতে সজিব যখন বৌয়ের ঘোমটা খুলে দেখলো এ যেন এক রাজকন্যা তার জন্য বসে আছে । সে যখন সজিবের টুপিটা খুলে দিল, তখনই তার চক্ষুস্থির হয়ে গেল। কিন্তু সে কিছু বললো না। মেনে নিল সব কিছু। সজিবের সঙ্গে যখন কথা বলতে লাগলো তখন সে বুঝলো তার বউটাও তোতলা। কথা বলার সময় আটকে যায় যাচ্ছে। তবুও সে সুন্দরী বউ পেয়ে খুব খুশি হলো। কোন কিছু না পাওয়ার চেয়ে সামান্য একটু পাওয়াও তো ভালো। এটা ভেবেই সানন্দে মনে নিল

বাবা-র কাছে সন্তানের আবেগাপ্লুত চিঠি 

গোলাপ মাহমুদ সৌরভ 


প্রিয়-বাবা

        আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছো বাবা, আশা করি প্রবাসের মাটিতে একপ্রকার ভালোই আছো। আমরা ও ভালো আছি। আমি যখন ছোট ছিলাম 

তুমি নাকি আমাকে অনেক ভালোবাসতে তোমার চোখের মণি ছিলাম। তোমার কোলে না নিলে নাকি আমার কান্না থামানো যেতোনা। তুমি সারাক্ষণ আমাকে তোমার কোলে আর কাঁধে চড়িয়ে বেড়াতে তোমাকে নিয়ে আমরা অনেক সুখেই ছিলাম। হঠাৎ তুমি সিদ্ধান্ত নিলে আমাদের কে আরো সুখে রাখার জন্য তুমি প্রবাসে যাবে আর অল্প কদিনের মধ্যে সব ব্যবস্থা হয়ে গেলো আমাদের ছেড়ে তুমি দূর প্রবাসে পাড়ি জমালে, তখনও আমি কিছু বুঝিনি আর আমি বুঝে ওঠার আগেই তুমি চলে গেছো। জানো বাবা, এখন আমি অনেক বড় হয়ে গেছি সবকিছু বুঝতে শিখেছি। মাঝে মাঝে আম্মুর কাছ থেকে আমাকে নিয়ে তোমার স্মৃতিকথা শুনি। আমি এখন স্কুলে যাই আম্মু আমাকে নিয়ে যায়। জানো বাবা, সকাল বেলা সব ছেলেদের বাবা এসে নাস্তা দিয়ে যায়, আমি ওদের দিকে তাকিয়ে থাকি। আবার যখন বিকেল হয় সবাই বাবা-র সাথে মাঠে খেলতে যায়, খেলা শেষে আবার নিয়ে আসে তখনও আমি তাদের দিকে তাকিয়ে থাকি আর তোমাকে মিস করি আজ যদি বাবা তুমি আমার পাশে থাকতে তাহলে আমিও সবসময় তোমার সাথে খেলাধুলা করতাম খুব মজা হতো। আমি মাঝে মাঝে আম্মু কে বলি, আম্মু তুমি শুধু একবার বাবাকে বলো দেশে চলে আসতে নাহয় ছুটিতে আসতে তখনই আম্মু আমাকে একটা ধমক দিয়ে বলে চুপ থাকো এখন তোমার বাবা দেশে আসলে কি খাবা? তখন আমি বলি এখন যেখান থেকে খাই তখন সেখান থেকেই খাবো। 

জানো বাবা, যখন রাত হয় তখনই আম্মু তোমার সাথে কথা বলে আমি শুনি তুমি আর আম্মু আমার কথা বলে দুজনেই কাঁদো, আমি জানি তোমরা দুজনেই আমাকে অনেক ভালোবাস তাই আম্মু আমি ঘুমিয়ে গেলে আমার কপালে চুমু দিয়ে বলে আর ক'টা দিন অপেক্ষা করো বাবা তোমার বাবা আসবে। তুমি কবে আসবে বাবা আমি তোমার পথ চেয়ে থাকি কখন সব ছেলেদের মতো আমি তোমার সাথে হাসি আনন্দে ঘুরে বেড়াবো। থাক বাবা আজ আর কিছু লিখবো না, তোমার অপেক্ষার পথ চেয়ে এখানেই শেষ করলাম। অনেক ভালো থেকো বাবা তুমি। আই লাভ ইউ বাবা,আই মিস ইউ। 


ইতি

তোমার আদরের সন্তান 

অনন্ত আব্দুল্লাহ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন

তানকা/স্বপন শর্মা