❑
হে বংশী বাদক
জিৎ মন্ডল
হে বংশী বাদক
যে প্রেম বিলালে তুমি
নিখিল এ ভুবনে,
সেই প্রেম আজও বাজে
প্রতিটা মানুষের হৃদয়ে
প্রতি মুহুর্ত প্রতি ক্ষণে।
হে বংশী বাদক
তুমি হীন কত কাল
চলেছে যে বয়ে,
তবু তুমি জেগে আছ
অসীমও আকাশে
সুখ তারা সম হয়ে।
❑
শিক্ষক
জিৎ মন্ডল
শিক্ষক মোদের জাতির পিতা
জ্বালায় জ্ঞানের দীপ্ত শিখা,
তাদের পরশে পেয়েছে সবাই
হৃদয় মাঝে জ্ঞানের দেখা।
বিশ্ব ব্রহ্মান্ড তাদের কাছে
নোয়ায় উঁচু শীর,
তাদের চরণ চুমে কত
শক্তিশালী বীর।
বক্সটা কাঁদে একটা চিঠি দিও
নূর মোহাম্মদ
পোষ্ট অফিসের বক্সটা কাঁদে
একটা চিঠি দিও
শান্তি পাবো তবেই আমি
ভালো থেকো প্রিয়।
আমার এখন কদর নেই যে
নেই তো কোনো দাম
হচ্ছে এখন প্রযুক্তিটার
হুদাই শুধু নাম।
ভালোবাসার চিঠির আশায়
আসে আমার ঘরে
মুচকি হেসে ছিলাম তখন
একলা একা ঘরে।
কেউবা কাদেঁ চিঠি পড়ে
কেউ হাসে প্রাণ খুলে
কেউ গড়িয়ে,গড়িয়ে কাঁদে
প্রিয়া গেছে ভুলে।
❑
ডায়েরির ছন্দ
নূর মোহাম্মদ
তুমি আমার ডায়েরির পাতায় ছন্দ হবে
চিরকাল কতগুলো শব্দ হয়ে নিরবে রবে
ব্যাথা ভরা কাতর চোখে তাকিয়ে আমি
সদা ডাকবো অঝোর ধারায় অন্তর্যামী।
তোমার কথা ভেবে ভেবে চাঁদনি রাতে
ঘুরেফিরে চলবো সদা, বলবো কথা চাঁদের সাথে।
তুমি আমার সৌরভ হয়ে থেকে যাবে শুকনো গোলাপ
দেখে দেখে প্রতিদিন বকেই যাবো শুধু প্রলাপ।
গন্ধ বিলিয়ে শুকনো ফুল ঝরে যাবে
স্মৃতির মাঝে কান্না হয়ে, নীরবে রবে।
ডায়েরিটা বেশ উপহাসে তাকিয়ে রবে
হৃদয় ব্যাথায় গুমড়ে কাঁদি ধুধু বালুচর শুন্য সবে।
❑
ফুল
মজনু মিয়া
ফুল ফুটে অলি ছুটে
গুনগুন গান গায়,
ফুলে ফুলে দোলে দোলে
অলিকূল মধু পায়।
শুধু মধু ফুল কদু
ঝিংঙে পটলে পায়,
উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে
সুখের কথাও গায়।
প্রকৃতিকে সুখ দেয়
সুন্দর দেখা যায়,
ফুলের অনেক দাম
ভালো মানুষেরা চায়।
❑
আকাশ ছোঁয়ার মই
নবী হোসেন নবীন
ভেবেছিলাম আকাশ ছোঁব
আমি উঠে দাঁড়াতেই আকাশটা উপরে উঠে গেল
পূরণ হলো না আর আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন।
সেই থেকে খোঁজছি আকাশ ছোঁয়ার মই
সে আর পেলাম কই?
মন থেকে মুছে ফেলে আকাশ ছোঁয়ার সাধ
জমিনের বুকে আপন কর্মে গড়ি রূপালি চাঁদ
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়াস তারা হয়ে হাসে চারপাশ।
কঠিন মাটির বক্ষ খুঁড়ে নেমে যাই পাতালপুরে
পাহাড়ের বুকে পদচিহ্ন এঁকে উঠে যাই হিমাদ্রিচূড়ে।
জোছনায় স্নান করে জুড়াই কর্মক্লান্ত দেহ
আমারই রচিত তারকাপুঞ্জ আলোকিত করে দেয়
আমার আঁধার গেহ।
যে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নে একদা ছিলাম বিভোর
সে আকাশ নিজেই নেমে এলো আজ আমার নিকুঞ্জপুর?
❑
বাগিচার বুলবুল
শাহীন খান
বাগিচার বুলবুল কবি কাজী নজরুল
বাংলার গৌরব, ফুলেরই সৌরভ
বিপ্লবী বিদ্রোহী তটিনীর কূল।
তুমি পুরো প্রীতিময় আহা কি যে গীতিময়
পরানের পরান তুমি পৃথিবীর বিস্ময়
ডাগর কালো আঁখি ঝাকড়ানো চুল।
মজুরের বন্ধু হিন্দোল সিন্ধু শিশিরের বিন্দু
চাঁদ তারা জোনাকি মধুময় ইন্দু
কথারমালা তুমি মিছে নয় কবু ভুল।
❑
কবি নজরুল
শাহীন খান
কার লেখা মন কাড়া মধু ভরপুর
কে বাজালো স্যামের মধুময় সুর।
পাখি ডাকা ফাল্গুনে মেতে কে গো রয়
কে শোনালো মুক্তির বাণীটা অভয়!
সূর্যের মতো বলো কার ছিলো তেজ
কার হুলে জুলুমেরা গোটালো যে লেজ।
কে ছিলো গো ফুল পাখি আকাশ বাতাস
কে ছিলো গো পানকৌড়ি বুলবুলি হাঁস।
গজল লেখায় কার হাত ছিলো ভালো
কে জ্বালালো আঁধারেতে আশারের আলো।
যাকে নিয়ে সমাজেতে ছিলো হুলুস্থুল
তিনি আর কেউ নন কবি নজরুল ।
❑
হৃদয়ে শরৎ
কনক কুমার প্রামানিক
ঋতু রানী শরৎ এখন
প্রকৃতির পরে,
শরতের এই আগমনে
সুখ সব ঘরে।
আনন্দে মন ভেসে যায়
কাশ বনে গেলে,
সাত সকালে ঘাসের বুকে
মুক্তো যে মেলে।
শিউলির মধুর সুবাস
কেড়ে নেয় মন,
শুভ্র আকাশে মেঘের ভেলা
শুভ প্রতিক্ষণ।
❑
ভাঁঙ্গা চুড়ির টুকরো
আনজানা ডালিয়া
খসে পড়া টিপটা তোমার হাতের তালুতে আটকে দিয়েছিলাম
তুমি সেটার যতন করোনি
রাখোনি মোবাইলের পিঠে আটকে
অথবা ম্যানিব্যাগে
দেখেছি ফেলে দিয়েছো কল পাড়ে।
খুঁনসুটিতে ভেঙ্গেছে রেশমী চুড়িটা
কাঁচের লাল টুকরো গুলো অনাদরে পড়েছিলো টেবিলের কোণে
বুঝতে পারলেনা হৃদয় ভাঙ্গার রক্তে ওগুলো আরো লাল হয়েছে।
কি করে বুঝবে?
এর আকাশে ওর আকাশে অনেক তো বেড়ালে
ঢুলুঢুলু চোখে নান্দনিকতা খুঁজেছো নখের আঁচড়ে।
❑
জীবনের পরাজয়
মমতা মজুমদার
একটা দীর্ঘশ্বাস,
আর এলোমেলো কিছু চাপা শূন্যতা!
এক পৃথিবী সমান বিষাদের ছাপ,
স্পর্শ করেছিল একাকীত্বের নিগূঢ় অতলান্তে।
সময়ের সাথে কিছু খোলস পাল্টে যাওয়ার দৃশ্যায়ণে।
রোজ রোজ ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়েছে কিছু অব্যক্ত স্মৃতি!
জীবনের চৌ-গলিতে ঘুরপাক খেলে রহস্যময় হাসি।
অথচ, এভাবেও তো বাঁচে কেউ কেউ;
বাঁচতে হয় নিয়ম করে অভিনয় করে।
ভালো থাকার রোজকার অনভ্যাসে কিছু ব্যথা
গুমরে ওঠে;
কিছু যন্ত্রণা কুঁকড়ে মরে অনাদরে লাঞ্ছিত হয়ে।
ব্যর্থতার ঝুলিতে কেবলই বিরহ পোড়ে!
দহনও বেদিয়া দিন যাপনের প্রহর গুনে
ভালো আছি এই তো সবাই নিজের ঘরে।
❑
ঘুষখোর
সেলিম আহমদ কাওছার
আজ কাল সমাজে
ঘুষখোরে ভরপুর
সব কাজে দৌড়ঝাঁপ
এগিয়ে বহু দূর।
যে কারোর বিপদে
সুযোগটা নেয় সে
খাতা এবং কলমে
হিসেবটা লয় কষে।
নিরুপায় হয়ে তাই
ঘুষ দিতে বাধ্য
ঘুষ দিলে হয়ে যায়
সব কাজ সাধ্য।
যতো হোক টালবাহানা
ঘুষ দেওয়া যাবে না
এই বলে নিলে পণ
ঘুষখোর পাবে না।
ঘুষের টাকায় জায়গা জমি
সম্পদের পাহাড় গড়ে
আজকে দেখি অনেকই
সুখের গাড়ি যায় চড়ে।
ঘুষ লেনদেন অসৎ কাজে
আছো যারা যুক্ত
ছেড়ে দাও সেই খারাপ পথ
হও পাপ মুক্ত।
❑
খোকার ইশকুল
বিজন বেপারী
খোকা গেলো ইশকুলেতে
সঙ্গে নেই তার বই,
তাইতো খোকা বসে বসে
খাচ্ছে ভাজা খই।
মাস্টার মশাই লিখতে বলেন
অ আ ক খ গ,
খোকা ল্যাখে সাদা পাতায়
মস্ত বড়ো চ।
গলা মেলায় সব বন্ধুরা
মামার বাড়ি'র সাথে,
এবার খুশি খুব যে খোকা
এমন মধুর পাঠে।
ছুটির ঘন্টা বাজালো তখন
খুশি সবার বেশ,
ছুটি, গরম গরম রুটি
ছোটে আপনদেশ।
❑
ছেলেটির দর্শনে শহর
মোঃ মামুন মোল্যা
শহর ঘুরে নয়নে দর্শন
স্নিগ্ধ ভোর ধুলার কর্ষণ।
কাক আর গাড়ির হর্ন
নিত্য ঘুম ভাঙার কারণ।
ইটের শহরে বসতি মন
দগ্ধে অর্থ করে আহরণ।
বাড়ি নারী ভরি-ভরি
মনুষ্যত্ব নেই কানা কড়ি।
অঢেল সম্পদ ফাঁকা ঘর
রক্তের শিরায় কষ্টের সাগর!
ওদের দ্বার গিলে দারোয়ান
যে ব্যবহার হৃদয়ে দৃশ্যমান!
❑
নীল আকাশে বুড়ী
গোলাপ মাহমুদ সৌরভ
আঁধার রাতে বাঁশ বাগানে
উঠে চাঁদের আলো,
ঝোপেঝাড়ে জোনাক জ্বলে
রাত্রি কেনো কালো।
নীল আকাশে বুড়ী থাকে
কালো মেঘের বাড়ি,
চাঁদ মামা রাগ করেছে
খোকার সঙ্গে আড়ি।
ডানা মেলা পরী এলো
হাতে জাদুর তারা,
খোকা যাবে বুড়ীর বাড়ি
তাইতো ঘুম হারা।
চাঁদ মামা বড্ড পাঁজি
খেলে যে লুকোচুরি,
জাদুর পরী এসো বাড়ি
দেবো আকাশ পাড়ি।
❑
ভালোবাসার পর্ন
গোলাপ মাহমুদ সৌরভ
যদি কাউকে ভালোবাস
ছবি আঁকো বুকে,
তাহার চোখে চোখ রাখো
বলতে হয়না মুখে।
আবেগ দিয়ে দেখো তাকে
বিবেক দিয়ে বুঝ,
মায়া মমতার পরশ দিয়ে
হৃদয় থেকে খুঁজ।
বিনা মেঘে বৃষ্টি আসবে
মন্দ বলবে লোকে,
তিক্ত কথায় ভুলে যেওনা
ভালোবাস যাকে।
আত্মবিশ্বাস নিয়ে তুমি
কাউকে দিও মন,
সব বাঁধার উর্ধ্বে হোক
ভালোবাসার পর্ন।
মিথ্যে আশার স্বপ্ন দেখে
পেওনা কেউ কষ্ট,
ছলনার ফাঁদ পেতো না
তবেই জীবন নষ্ট।
❑
মেঘের টানে
মেশকাতুন নাহার
মেঘ রে আমার ওরে ও মেঘ সঙ্গে নিবি তুই?
ইচ্ছে করে তোরই সাথে আকাশটাকে ছুঁই।
মেঘ রে আমার কোথায় রাখিস এমন শীতল জল?
দেখবো আমি সঙ্গী হয়ে চল না নিয়ে চল।
শুন রে আমার তোরই সাথে করবো আমি মিল,
রঙিন ইচ্ছার ডানা মেলবো হই যদি গাঙচিল।
আবেশ মাখা পবন এসে ছুঁয়ে দিবে প্রাণ,
মেঘ রে আমার আয় না যুগল শূন্যে করি স্নান।
মেঘ রে আমার চল না উড়ে উঁচু গিরির গায়,
যেখান থেকে ভোরের সূর্য দেখতে পাওয়া যায়।
সবুজ ঘেরা বুনো ফুলে অদ্ভুত নেশার টান,
মেঘ রে মেঘ শুনতে কি পাস জোনাকিদের গান?
তোর চোখেরই জলে বাঁধবো রিনিঝিনি এক সুর,
মেঘ রে মেঘ তুই রাজ্য থেকে করে দিস না দূর।
❑
শারদীয় অনুরঞ্জন
মেশকাতুন নাহার
কান্না থামাও বৃষ্টি দেবী বলে শরৎ এসে,
শিউলি ফুল মালা গেঁথে খোঁপায় পরায় হেসে।
শহর থেকে কিছুদূরে নদী যেথায় ঘেঁষে,
দুঃখগুলো ছুঁড়ে দাও না শুভ্র কাশের দেশে।
ওই যে দেখো পদ্ম ফোঁটা বিলের জলে ভাসে,
লাউয়ের ডগায় শিশির ছুঁয়ে পড়ে দূর্বা ঘাসে।
রঙ বেরঙের প্রজাপতি ছুঁয়ে যায় যে ফুলে,
কচি ধানের মুঞ্জুরীতে খুশির ঝিলিক দুলে।
গোমড়া মুখে আর থেকো না একটু বস পাশে,
রৌদ্র ছায়ায় রূপের প্রভায় মজি ভাদ্র মাসে।
নীল শাড়িতে দেবী তুমি মোড়ে অঙ্গ খানি,
ঢাকের বাদ্যে নেচে গেয়ে মুছবে সকল গ্লানি।
সাতটি রঙের বর্ণিল সাজে করবো লক্ষ্মীর বরণ,
হৃদ মন্দিরে পূজ্য করে রাখবো গো আমরন।
❑
মাকাল এ জীবন
মোঃ দিদারুল ইসলাম
দু'দিনের ভুবন
লোভে কাতর মন,
হরেক আয়োজন
মেরে পরের ধন।
মাকাল এ জীবন
মাছি মার্কা মন,
ছুটছি ভন ভন
পচায় খুশি মন।
সবার প্রিয়জন
থাকলে হাতে ধন,
বিপদেরই ক্ষণ
পাশে দুয়েক জন।
স্বার্থের এ ভুবন
কেউ নয় আপন,
ছাড়ব কু-জীবন
করি সবাই পণ।
❑
পাকা তালের ঘ্রাণ
কাজী আলম ভূঁঞা
নাক ইন্দ্রিয় সতেজ করে
পাকা তালের ঘ্রাণে
শরৎকালের প্রিয় ফল
অন্ধ লোকও জানে।
তালের পিঠা ভিন্ন মিঠা
অন্যরকম স্বাদ
ভাদ্র মাসে পিঠা খেতে
কেউতো যায়না বাদ।
গল্পের মাঝে তালের পিঠা
খাইতে লাগে বেশ
পিঠার গন্ধে মনের মাঝে
দারুণ খুশির রেশ।
তাল রসের পায়েস রাঁধে
গন্ধে ভাসে ঘর
মায়ের হাতের পায়েস খেয়ে
জুড়ায় অন্তর।
❑
মায়ের কাছে চিঠি
সাইদুল ইসলাম সাইদ
তোমায় মা'গো মনে পড়ে
যখন একা থাকি।
দু'চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে
রুমাল দিয়ে ঢাকি।
খাবার খেতে এসে মা'গো
তোমায় করি মিস,
বাবা বলে ডেকে আমায়
দিতে গালে কিস।
বলতে বাবা কি খাবি তুই
দিচ্ছি আমি তাই,
আজকে আমি শহরেতে
তুমি কাছে নাই।
সারাজীবন ভেবে গেলে
তুমি সবার কথা।
আমায় মা'গো ক্ষমা করবে
দিচ্ছি কত ব্যথা।
নিজের প্রতি যত্ন নিবে
খাবার সময় মত,
ক'দিন পরে আসব মা'গো
দেখব তোমায় শত।
❑
মা জননী
ফারুক আহম্মেদ জীবন
"মা " শব্দটি বড়ই সুন্দর
যেনো, ডাকতে লাগে মধু,
মায়ের মুখের কথায় আছে
স্নেহের মমতাময়ী যাদু।
দশ মাস, দশ দিন " মা "
সন্তান গর্ভে রাখিয়া,
জন্মের পর মুখটি দেখে
" মা " ওঠেন হাসিয়া।
পুরো ত্রিশটি মাস বুকের দুধে
" মা " যে বড় করে,
একটু ব্যথা পেলে সন্তানের
মায়ের চোখে অশ্রু ঝরে।
" মা " শব্দটি যে অতি আপন
যেনো পরশ মাখা " মা,
শত অপরাধ করলেও আমি
মা -তা- মনে রাখে না।
পেটের খিদেই আমার যদি
একটু শুকায় মুখটি,
খাওয়াতে না পারিলে " মা "
যে, কেঁদে ভাসাই বুকটি।
শত দুঃখে থাকলেও " মা "
আমি একটু যদি হাসি,
আমার মুখের হাসি দেখে
মা -যে, হয় অনেক খুশি।
তাই, যতো দূরেই রইবো আমি
থাকবো মায়ের বুকে,
কাঁদবো আমি মায়ের দুঃখে
আমি, হাসবো মায়ের সুখে।
আল্লার পরেই আপন হলো "মা "
পরম স্নেহ মমতায়,
তাই তো বলি মায়ের কোন
জগতে তুলনা তো নাই।
❑
সই
কাজী নাজরিন
রুনু আর ছন্দা
তারা দু'জন সই
রুনু মেয়ে হাসনাহেনা
ছন্দা মেয়ে জুঁই।
শালিকের বেশে তারা
একসাথে ছোটে
হাসিমাখা ভাব জমে
দু'জনের ঠোঁটে।
জেসমিন মেয়েটাও
তাদেরই সই
মিষ্টি মেয়ে গুলো
কই তোরা কই?
আয় আয় ফুল পাখি
মজার দেশে
লাল নীল পরী সেজে
নতুন বেশে।
আকাশের বুকে তোরা
ভাব জমে দে
মনের কিনারে শুধু
আমাকেও নে।
❑
বৃষ্টি ঝরছে
মাওলানা তাজুল ইসলাম নাহীদ
বৃষ্টি ঝরছে টিনের চালে
লাগছে খুশি বেশ,
মনের সুখে ঘুরবো আজকে
দেশ থেকে ঐ দেশ।
এসো না যাই খেলা করতে
সবুজ মাঠের পর?
আসুন বৃষ্টি ইচ্ছেমত
করে যে ঝর ঝর।
বৃষ্টির দিনে খেলাধূলার
হয় না কোনো তুল,
খেলে শেষে আনবো আরো
সাদা শাপলা ফুল।
❑
অবহেলা
নাসরীন খান
তুমি অবহেলা করলে
আমার আমিকে হারিয়ে ফেলি
অতীত তখন সামনে দাঁড়ায়
আমি অতীত নিয়ে খেলতে শুরু করি।
প্রেমিক ছিলে না কখনো
বুঝতে পারনি এই আমাকে
ভালবাসায় নয় যেন দায়বদ্ধতা!
নিছক হেয়ালিপনার ডাকে।
বুঝতে চাওনি, ধরতে চাও নি
শোপিচে সাজানো ডালা
যখন খুশি! খেলেছো,ছুঁড়েছো
হেঁয়ালি গলার মালা।
শুধু খেলার সাথী হবো?
ভাবনার কেন নই?
যখন যেমন ছুঁবে,ধরবে
আমরণ ভালবাসায় কই!
অবহেলিত এক মোম শিখা
পুড়িয়ে পুড়িয়ে ক্ষয়
এ কোন খেলা খেলছো সদা
ভালবাসায় বা আপনে নয়।।
❑
খুকুর পাখি
ফেরদৌসী খানম রীনা
অনেক বায়না করে খুকু
কিনলো দুটি পাখি,
সারাক্ষণ ব্যস্ত পাখি নিয়ে
আনন্দে ভরা আঁখি।
পাখি দুটি তার খুবই
দেখতে চমৎকার,
সারাক্ষণ খাঁচায় ছুটোছুটি
খুদা পেলে করে চিৎকার।
নাম রাখলো পাখি দুটির
পুটু আর মুটু,
থাকতে চায়না খাঁচার ভিতর
তারা ভীষণ দুষ্টু।
পাখি নিয়ে ভাবনা বানাবে
ওদের জন্য ঘর,
তারপর ওরা দিবে ডিম
নানান চিন্তা দিনভর।
❑
নতুন ভোরের প্রতি ছুটছো
সাঈদুর রহমান লিটন
ক্লান্ত সূর্যের মতো হেলে পড়ি আজকাল,
দাপট আর প্রভাব সবই কমে গেছে,
তোমার রাজত্ব আমারই ছিলো দখলে
প্রতিপত্তি ছিল আর সবার চেয়ে বেশি।
বিকেলে হেলে পড়া সূর্যের ন্যায় অস্তমিত হয়ে
আমার শক্তি তোমার কাছে ক্লান্ত হয়ে উঠেছে।
তুমি নতুন ভোরের প্রতি ছুটছো দুর্বার বেগে,
নতুনত্ব তোমাকে পেয়ে বসেছে আফিমের মতো
নতুনের তেজ, নতুনের চকমকি তোমাকে
নিয়ে যাচ্ছে অন্য এক রাজত্বে।
তুমি অতীত কে পিছনে ফেলে চকচকে বর্তমানে
ডুবে যাচ্ছ অন্ধকারে নাকি আলোয় ভেবে দেখো।
বর্তমান তো বর্তমানের সূর্যের অধীনেই চলবে,
পুরোনকে নর্দমায় ফেলে নয় বরং সাথে নিয়ে
নবজাগরণ ঘটানোই তো মনুষ্যত্ব।
❑
শরৎকাল
তপন মাইতি
গ্রীষ্মের মত এত চরম দহন জ্বালা
অসহ্য অস্বস্তিতে পড়ব না বোধহয়।
বর্ষার মত এত বানভাসি অভিশাপ
যথাসর্বস্ব পড়বে না আশা রাখি।
সমোষ্ণ আবহাওয়ায় মন মধ্যবিত্ত।
আমাদের বেশি কিছু চাওয়া পাওয়া নেই।
আমাদের রোয়া ধান ডুবে যাওয়ায় আবার
পুনরায় তিন গ্রাম উজার করে রুয়েছি!
আমাদের ভাঙা চালে জোড়া তালি তাপ্তি দিই।
এখন সবুজ কচি ধানে এক আধ পশলা
বৃষ্টি বন্ধুর মত ভীষণ ভাবে দরকার!
গাঢ় নিবিড় কালো মেঘগুলো সহিষ্ণু
হলে পেঁজা তুলো নীলাকাশে ভাসবে।
শিউলিফুল ঝরবে দুর্বা-শিশির ঘাসে।
কাশবন দোলায় ফুটে উঠবে সাগরের ঢেউ।
খুব ভোর মোরগের ডাক সংকেতে হিম হিম ভাব।
নীলাকাশে উড়বে উৎসব স্বপ্ন ঘুড়ি।
আমরা সেই সময়ের পরিবর্তন চাই না
আমরা সেই মুহুর্তের বদলা বদল চাই না
যেটা আমাদের দুর্গতি ডেকে আনে।
পাকা ধানে বৃষ্টি পড়লে সর্বনাশ হয়!
আমরা শরৎকে শরতের মত দেখব।
❑
মুক্তির মসনদ
রফিকুল ইসলাম
শতমূলী বোধে রচিত হলো না ভিত
যে যার মতো নিজের গাইছে গীত।
উজানের রাজনীতি বয়ে লবণাক্ত ঘ্রাণ
সুরাপত্রে ডুবে সৌখিন মাতালের প্রাণ।
নকশিকাঁথা জুড়ে হিংস্রো পাখির ঠোঁট
ঈগল ও শকুনেরা বাঁধে আমরণ জোট।
চাবুকের কারুকাজে কম্পিত হিমাচল
ধিকধিক ধমণীর মতো রক্তিম চলাচল।
আকাশ ছঁয়ে গেছে বাজারের বাটখারা
ব্যবসায়ী জমিন আজ ফসলে উর্বরা।
শাসন শোষণে কফির কাপে দেয় চুমুক
দম্ভীত পদভারে ভাঙে পিপীলিকার বুক।
কতদূর কতযুগ কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের সনদ
শতমূলী বোধে আমাদের মুক্তির মসনদ।