আজকের আয়োজন




 

❑ শনিবার  ❑ ২৯ জুলাই ২০২৩ ইংরেজি  ❑ ১৫ শ্রাবণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ❑ ঢাকা।

বানের পানি

লুৎফুর রহমান চৌধুরী


সাদা মেঘে খেলা করে

আকাশেরই সাথে

ক্লান্ত হয়ে নীড়ে ফিরে

পাখি গুলো রাতে।


নৃত্য করে তালে তালে

হাওড় নদীর পানি

দূর থেকে যে ভেসে আসে

হাসে হৃদয়খানি।


সারি সারি গাছ গাছালি 

পানিতে যায় ডুবে

বানভাসি সেই মানুষগুলোর 

কষ্ট বাড়ে খুবে।


আকাশ পানে যাচ্ছে উড়ে

সাদা বকের সারি.

মেঘ বৃষ্টিতে যায় যে ভিজে

অতি তাড়াতাড়ি।



বান

ইলিয়াছ হোসেন

 


গ্রীষ্ম গিয়ে বর্ষা এসে

হৃদয়ে স্বস্তি দেয়,

অবিরত বৃষ্টি আবার

শান্তি কেড়ে নেয়।


অতিরিক্ত জলের ফলে

বর্ষা রূপ ন্যায় বানে,

বসতবাড়ি প্রাণীকুলে

চরম আঘাত হানে।


বানের তোড়ে চতুর্দিকে

থৈথৈ করে জল,

আশ্রয় কেন্দ্র বানভাসিদের

হয় যে আশ্রয়স্থল।


আশায় থাকে বানভাসিরা

কখন আসে ত্রাণ?

খেতে পারে দু’মুঠো ভাত

বাঁচে তাদের প্রাণ।


বৃষ্টির জলে দিও না বান

ওগো মহান প্রভু,

বসতবাড়ি প্রাণীকুলের

ধ্বংস চাই না কভু।


ছন্দ- আনন্দ

সাঈদুর রহমান লিটন


মনের মাঝে পুলক জাগে

ছন্দে থাকলে সুর,

ছন্দ ভরে লিখলে লেখা

যাবে বহু দূর।


ছন্দে লেখা পদ্যগুলো

কাঁড়ছে অনেক মন,

স্রোতের বেগে যাচ্ছে কেটে

অলস থাকা ক্ষণ।


শুদ্ধ বাংলায় করলে চর্চা

বাংলা সন্মান পায়,

ভুলে ভরা লেখা দেখলে

হাসির খোরাক হয়।


প্রমিত বাংলা সবার প্রিয়

কাব্যে যদি হয়,

দেশ -বিদেশ ছড়িয়ে পরে

চিত্ত করে জয়।


তালে লয়ে মিলে মিশে

কাব্য করি ভাই,

সর্বোস্তরে শুদ্ধ বাংলা

আমরা এখন চাই।


দূর্বা ঘাস (লিমেরিক)

মোঃ দিদারুল ইসলাম


চালাকিতে পটু তুমি, গভীর জলের মাছ,

ফিটফাট চলাফেরা, ভাবসাবে তাল গাছ।

দিবানিশি আছ মজে,

উঁচু লেভেলের খোঁজে,

আমার ঐ চোখে তুমি, নিছক দূর্বা ঘাস।


বাঁচি না আর 

মাওলানা তাজুল ইসলাম নাহীদ


রোদের তাপে ঘামতে থাকি

থাকলেও বসে ঘরে,

ফ‍্যান চালাই আর এসি চালাই

তবুও যে ঘাম ঝরে!


আষাঢ় মাসের রৌদ্রেরই তাপ

লাগে যখন গায়ে,

প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে সবাই 

বসি গাছের ছায়ে।


তবু ও যে জান বাঁচে না

হাঁপাই বসে বসে,

ঘামগুলো সব শরীর থেকে 

পড়ে কষে কষে।


মানুষ বলো পশু বলো

কেউ নাহি আজ বাঁচে,

এই গরমের ঔষধ কি ভাই

কারো কাছে আছে?


শান্তি পাই না ঘরে বা-রে

কী যে এখন করি,

কমে না তো গরম আহা!

যতই দোয়া পড়ি।


ক্লান্তি করেছে ভর

জাহাঙ্গীর চৌধুরী 


ক্লান্তি আমায় করেছে ভর অন্তর কাঁপে থরথর, 

সব জ্ঞাতি হয়েছে পর ছেড়েছি আপন ঘর।

যাদের  তরে জীবনের ক্ষয় তারা বলে অজয়,

মানুষ পেলে ভুবনে জয় নিজকে ভাবে বলয়।

সমাজে তুলিয়া মাথা স্বজনকে দেয় ব্যাথা, 

অন্যের সাথে হয় সখ্যতা ভ্রমি রক্তের কথা।

খুঁজি বেড়াই  বৃদ্ধাশ্রম  খুঁজি শ্রমিকের শ্রম, 

কর্মেতে নেই শরমভরম শান্তি আছে পরম।

অমর নহে কেউ ধরায়  মরণ নিয়ে বেড়ায়, 

কর্ম যাদের মানবতায় থাকবে স্মৃতির পাতায়। 

উদারতায় আমি পাই জয় কৃপণতায় ভাই নয়,

নৈতিকতা যাদের অক্ষয় বিজয় হয় সর্বময়।

করিয়া পেট ভরতি আহার জীবন করো বাহার, 

যারা আছে পাশে তোমার তত্ত্বতালাশ নেই তার। 

জনম মরণ সবার সমান অর্থের হয় ব্যবধান,

দিলে ভবে মানুষকে মান পাবে অধিক সম্মান।



অসহায়

     সাইদুল ইসলাম সাইদ 


   কতো মানুষ পথের ধারে

   করে তারা বাস।

   সুখ বিলাসীর মানুষ গুলো 

   বলে না কী খাস?


   দিনের পর দিন রাতের পর রাত

   থাকে তারা পরে,

   কেউ করে না আদর তাদের

   নেয় না কারো ঘরে।


   সবার পিছে যায় যে তারা

   একটু খাবার দাও

   গালমন্দ যে করে সবাই

   কেউ বলে না নাও


   অসহায় যে সেই বোঝে রে

   তার যে কতো জ্বালা। 

   এই ধরাতে সুখ যে তাদের

   হীরা সোনার মালা।


প্রেরণা

শাহ আলম বিল্লাল


তুমি আমার সুখের হাসি

তোমার বুকে স্বাধীন

তুমি আমার পাঠশালা মা

তোমায় পেলেই তা ধিন।


তুমি আমার মুখের ভাষা

প্রাণ জুড়ানো হাসি

সকল কিছুর চাইতে মাগো

তোমায় ভালোবাসি।


মাগো তুমি থাকলে দূরে

মন হয়ে যায় পাখি

মনে থাকে দুঃখ ভরা

তোমায় শুধু ডাকি।


তোমার ডাকে জেগে উঠি

কাজতো করি শুরু

তুমি আমার সব প্রেরণা

উৎসাহিত পুরো।


একটু যদি ভাবি

মজনু মিয়া 


যাদের আছে পেয়ে খুশি 

সুখে যেন্ না হই কাতর,

যাদের কিছু নেই তাদের দেই

রাখি না যেন্ মন পাথর।


ওরাও মানুষ এই দেশেরই 

বাঁচার আছে অধিকার, 

খুশি বা আনন্দ ক্ষণের 

পাবার সে সুখ স্বাধিকার। 


মানবিক হই মানুষ হয়ে

মানুষের জন্য দুহাত, 

দেই বাড়িয়ে সুখ বিলিয়ে 

সুখের নিদ্রায় কাটাই রাত।


চামচিকার লাথি 

মাহবুব-এ-খোদা 


যে তোমারে ঘৃণা করে

যেও না তার কাছে,

বৃথা সময় নষ্ট হবে

ঘুরে তারই পাছে।

মানুষ যদি হতে পারো

ছড়িয়ে যাবে নাম,

দেখবে তবে শত লোকে

দেবে তোমার দাম।

মন্দ কাজে লিপ্ত হলে

বাসবে না কেউ ভালো, 

চামচিকাতে দেবে লাথি 

জীবন হবে কালো।


খুকুর পুতুল 

ফেরদৌসী খানম রীনা 


লেখাপড়া ভাল্লাগে  না

খুকুর পুতুলের  বিয়ে, 

মাথায় তাই অনেক চিন্তা 

পুতুল বিয়ে  নিয়ে। 


বিকেল বেলা ভাবে খুকু

কিভাবে সাজাবো ঘর,

খুকুমণি সারাদিন ব্যস্ত 

নিয়ে তার সংসার।


গোলাপি শাড়ি না লাল শাড়ি 

কোনটা লাগবে ভালো

যে শাড়িটা খুব সুন্দর ঝলমলে 

ঘর করবে আলো।


অনেক বেছে খুকুমণির পছন্দ 

লাল রঙের শাড়ি,

বর আসবে টুপি পরে চলে

আসবে নিয়ে গাড়ি।


সারাদিন খুকু ব্যস্ত যাবে 

পুতুল শ্বশুর বাড়ি, 

বর আসবে রমাল মুখে 

আনবে মিষ্টির হাঁড়ি।


কারবালার শপথ

নবী হোসেন নবীন


এজিদের অবিচার

রুখে দিবে বারবার

হোসেনের তলোয়ার।


মজলুম জনতার

ফিরে পেতে অধিকার

হোসেনের দরকার।


যেথায় আসে অভিঘাত

জোরে করে প্রতিঘাত

বেছে নাও শাহাদাৎ।


শোকের এ চেতনায়

জেগে ওঠো মৃতপ্রায়

ভেসে যাবে অন্যায়।


উঁচু করে স্বীয় শির

হাতে নিয়ে বিষতীর

আগুয়ান হও বীর।


চোখে ভাসে কারবালা

বুকে আছে শোকজ্বালা

মুখে কারা দেয় তালা?


হয়ে সবে সোচ্চার

বলো মুখে একবার

আল্লাহু আকবর।


দূর করো সব ভয়

সাথে আছে দয়াময়

নিশ্চয় হবে জয়।



ভালোবাসার উপত্যকা

মান্নান নূর 


নূরের কবিতা পড়ো?

প্রেম ছাড়া সে লিখেছে কী আর এমন?

চন্ডিদাস রজকিনী  শ্রীকৃষ্ণ যেমন

রাণী বিলকিসের চোখে হয়েছে সে জড়ো।


এ-চোখের ভাষা বুঝে 

সাধ্যকার অনায়াসে করে যে তরজমা? 

রোমিও হৃদয় যদি নির্মল উপমা

ক্লিওপেট্রার উপত্যকায় ভালোবাসা খোঁজে!


ইউসুফ দাঁড়ায়ে যদি 

খোঁজে নেয় জুলেখার প্রেমের আরতি 

মজনু দু‘চোখ আমার কে নেবে বিরতি?

নূরও ডুবেছে তাই আজ প্রেমে নিরবধি।



কষ্ট চাপা

শাহ আলম বিল্লাল


বুকের ভিতর কষ্ট চাপা

মুখে আমার হাসি

হাসি মুখে বলি শুধু

ভীষণ ভালোবাসি।


ভালোবাসি সত্য আমি

নয়তো মোটেও মেকি

হৃদয় মাঝে পুষি তোমায়

খুব নিরবে দেখি।


কল্পনাতে তোমায় নিয়ে

মঙ্গল গ্রহে ঘুরি

এক নিমিষে যাই হয়ে যাই

নাটাই ছেঁড়া ঘুড়ি।

গাঁয়ের শ্রাবণ

বিজন বেপারী 


শ্রাবণ মাসে মেঠো পথে

চলতে ভীষণ কষ্ট,

পা পিছলে গেলেই হবে 

জামা কাপড় নষ্ট!


তাইতো দেখি বুড়ো দাদু

সাবধানে পা ফ্যালে,

ছোট্ট খোকা কিশোরীরা

আধটুকু পা ম্যালে।


গড়গড়িয়ে ব‌ইছে পানি

পথের ওধার দিয়ে,

ধানের ক্ষেতে ডাহুক পাখি

ঘুরছে ছানা নিয়ে।


গলা সমান পানির ঝিলে

শাপলা তোলে কেউ,

উপচে পড়ে নদী গাঙে

মধুর শতো ঢেউ।




তেল ফুরোলেই রাত ফুরোবে

আনজানা ডালিয়া


ফুলের বাড়িতে জ্বলবে কিন্তু কেরোসিনের বাতি

তেল ফুরোলেই রাত ফুরোবে

সকাল আসবে হাসতে হাসতে

বারান্দায় পেতে রাখবো কাগজের মোড়া

সকালের মিষ্টি রোদ খাবে তুমি

আমি শুনবো পাখির ঝগড়া।

ও হ্যাঁ কাগজ দিয়ে মোড়া বানাতে জানতো?

আমার সাথে হাত লাগিয়ে শিখে নিবে

পেছন বারান্দা হবে আমার ঢেকি ঘর

ভাদরের ভেজা ধানে চিঁড়ে করবো,

চাল ছাটবো লালচে ভাতের জন্য।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন

তানকা/স্বপন শর্মা