❑ ছড়া
❑
আষাঢ়
মো মামুন মোল্যা
গগনে ধূসর মেঘ
করে হুড়োহুড়ি,
টাপুরটুপুর অঝরে বৃষ্টি
ছোটে গুড়াগুড়ি।
খাল বিল থই থই
ব্যাঙ ডাকে মক,
জেলেদের মুখে হাসি
ধরে কত বক।
চাষী ভাই ছুটে চলে
কাঁধে নিয়ে লাঙল,
বলদ গুল কেঁদে মরে
কবে হবে মঙ্গল?
❑
রক্তচোষা প্রাণী
মেশকাতুন নাহার
চতুর্দিকে এডিস মশার বেড়েছে খুব দাপট,
সুযোগ পেলেই হুল ফুটিয়ে কামড়ে দেয় যে ঝটপট।
রক্তচোষা এসব প্রাণীর অতি ভয়ঙ্কর রূপ,
ঝোপেঝাড়ে জলাশয়ে বাস করে এরা চুপ।
আরও কিছু বাস করে যে নর্দমারই জলে,
ভাইরাস ছড়ায় মানব দেহে ওরা দলে দলে।
ভদ্রবেশী কিছু মশা এসির নিচে থাকে,
সোফায় বসে পা যে দোলায় রঙিন পর্দার ফাঁকে।
ক্ষুদ্র হলেও প্রাণীগুলোর প্রভাব সাংঘাতিক হয়,
মানে না তো আইন কানুন,পায় না কোনো ভয়।
এসব মশার প্রজনন স্থল করতে হবে ধ্বংস,
তবেই দেশের রক্ষা পাবে মানবজাতির বংশ।
❑
ডেংঙ্গু
সাইদুল ইসলাম সাইদ
ডেংঙ্গু হলো ভীষণ পাজি
আমজনতা শোনো,
টাকার মায়া ছেড়ে সবাই
মশারি টা কিনো।
ডেংঙ্গুরা যে মানুষ তাড়ায়
দিনে সবাই মিলে,
বুঝবে তখন কেমন লাগে
কামড় তোমায় দিলে।
পথে ঘাটে হাট বাজারে
যখন তুমি যাবে,
লম্বা জামা পাঞ্জাবি'তে
কিছু রক্ষা পাবে।
সকাল বেলা ঘুমের সময়
কিংবা সন্ধ্যা রাতে,
মশারি টা টানিয়ে নাও
তুমি নিজের হাতে।
বাড়ির পাশে ময়লা পানি
কিংবা থাকা ঝোপ,
সেখানেতেই ডেঙ্গু থাকে
বলছে সবাই খুব।
❑
কেউ লেখে না চিঠি
মাওলানা তাজুল ইসলাম নাহীদ
আগের যুগে কথা হত
চিঠির দ্বারা ভাই,
সে সব দৃশ্য এখন যে আর
কোথাও নাহি পাই।
মাস খানেক যে সময় লাগতো
চাইতে হত বার,
পিওন চাচা এসে বলতো
এই চিঠিটা কার।
পত্র বুঝে হাতে নিয়ে
খুশি হত বেশ,
সেই না পত্রের খুশির কথা
বলতো সারাদেশ।
কোথায় গেলো সে সব আজকে
এসে ইন্টারনেট,
লেখে না কেউ চিঠি এখন
পেয়ে মোবাইল সেট।
চিঠিপত্র আজকের দিনে
কেউ লেখে না আর,
যায় না কেহ চিঠি লিখতে
শিক্ষিতদের দ্বার।
❑
বর্ষা এলে
ইলিয়াছ হোসেন
বর্ষা এলে আকাশ জুড়ে
মেঘের ভেলা ভাসে,
মেঘের ফাঁকে দিবাকরে
ক্ষণে ক্ষণে হাসে।
কখনো মেঘ ভারী হয়ে
অঝোর ধারায় ঝরে,
রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টির শব্দে
হৃদয় আনচান করে।
পুকুর নদী খাল ও বিলে
যৌবন ফিরে পায়,
কদম কেয়া জুঁই কামিনী
সৌরভ যে ছড়ায়।
চাষির মনে খুশির জোয়ার
জাম কাঁঠাল আমে,
হাট বাজারে বিক্রি করে
মনের মতো দামে।
বর্ষার শোভায় মুগ্ধ হয়ে
কাব্য লিখেন কবি,
চিত্রকরে তুলি দিয়ে
আঁকেন বর্ষার ছবি।
❑
অবাক চোখে
মনিরুল ইসলাম দোলা
বাদল বেলা গাঁয়ের পথে
এলোকেশী কন্যা,
যাচ্ছে যেমন দেখতে লাগে
কালো মেঘের বন্যা।
সাদা কাশের ফুলে যেমন
নদীর কূলে দোলে,
শুভ্র তাহার শাড়ি খানি
হাওয়ার পালে ফোলে।
মেঘের পানে কী-যে দেখে
অবাক করা চোখে,
নদীর মতোই বক্র সে-যে
দেখে পাগল লোকে।
নদীর জলে কলসি ভরে
রোজ-ই দুপুর বেলা,
রূপের পাগল নাউয়ের মাঝি
হর্ষে করে খেলা।
❑
ঊর্ধ্বমুখী বাজার
বিজন বেপারী
নিত্য লাফায় বাজার মূল্য
ঊর্ধ্বমুখী বেশ,
কেউ ধরে না লাগাম টেনে
কোথায় বৃদ্ধি শেষ?
সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরা
ভোগায় জনগণ,
পকেট কাটে গরীব দুখীর
হয়ে অচেতন।
কর্তার থাকে মেজাজ গরম
হাটে কিংবা ঘরে,
গরীব শিশুর লেখাপড়া
ভীষণই নড়বড়ে।
গরীব আরও হচ্ছে গরীব
ধনীর পকেট ভারি,
মধ্যবিত্তর মুখে তালা
কষ্টে জীবন পাড়ি।
❑
পাড়ি
শাহ আলম বিল্লাল
মাথার উপর আকাশ আমার
আকাশ ভরা নীলে
সুদূর আকাশ দিতাম পাড়ি
পাখির সাথে মিলে।
ডানা মেলে উড়ে পাখি
নানান দেশে যায় রে
ভিসা পাসপোর্ট ছাড়া উড়ে
যেন স্বদেশ বাইরে।
খোকন সোনা পাখি হবে
উড়বে ডানা মেলে
সুদূর আকাশ দেবে পাড়ি
থাকবে হেসে খেলে।
❑
ডুমুর ফুল
মোঃ দিদারুল ইসলাম
ভেবেছি তোরে গোলাপ ফুল
ব্যাকুল হয়ে করেছি ভুল,
তোরই রূপে পাগল পারা
কতক জনা দিয়েছে নাড়া।
ভেবেছি তোরে শাপলা ফুল
পুলকে সদা খেতাম দোল,
যতন করে আনতে তোলে
তলিয়ে গেছি গভীর জলে।
ভেবেছি তোরে পদ্ম ফুল
রূপের ঢঙে ভুলেছি কুল,
শরীর তোর কাঁটায় ভরা
ছুঁইতে গিয়ে খেয়েছি ধরা।
স্বপন ছিল সাজাবো ঘর
আমারে তুই করলি পর,
চিনতে তোরে করেছি ভুল
আসলে তুই ডুমুর ফুল।
❑
বৃষ্টি ভেজা দিনে
শেখ সোহেল রেজা
খুকুমনি নূপুর পায়ে
বৃষ্টি ভেজা দিনে,
নাচছে দেখো তাদিং তাদিং
খুশি কতো মনে।
খুকুমণির নাচ দেখে
নাচে খাঁচার পাখি,
ময়না,টিয়া,শালিক গুলো
করছে ডাকাডাকি।
রিমঝিম বৃষ্টি পড়ে
শব্দ চালের টিনে,
খুকুমণি ভেঁজায় খুশি
বৃষ্টি ভেঁজা দিনে।