বৃষ্টি নূপুর
শাহ আলম বিল্লাল
খালবিল নদীনালা
পানি থৈ থৈ
উল্লাসে শিশু মনে
করে হৈ চৈ ।
অবিরত বর্ষা
চারদিক পানি
টাপুর টুপুর টলমল
পানি পানি কলকল।
কলকল ছলছল
টলমল টলমল
চোখ যত দূর
বৃষ্টি নূপুর।
নব শ্রাবণ
মোঃ মামুন মোল্যা
নব নব শ্রাবণ গগনে
সাদা কালো মেঘ,
মেতেছে মৃদু মৃদু বাতাসে
নাচে বনের বাঘ।
খাল বিল জলে ভরা
কিলবিল করে মীন
শাপলা পদ্ম ফুটছে জলে
পাখি নাচে ধিন।
আঁকা বাঁকা নদীর বুকে
ডিঙি সারি সারি,
বানের জলে ভাঙ্গছে ভিটা
চোখে ঝরে বারি।
সাঁঝে ফোটে কদম কেয়া
বাদুড় পড়ে ঝাঁকে,
ফুলের গন্ধে ঘুম আসেনা
শ্রাবণ এসে ডাকে।
শ্রাবণ দিনে
গোলাপ মাহমুদ সৌরভ
শ্রাবণের মুশলধারা বৃষ্টি
ঝরছে রাতদিন ভর,
জোড়াতালি টিনের চালে
থাকতে লাগে ঢরঢর।
থেমে যায় শ্রাবণের মেঘ
আর কতো তুই ঝরবি,
আকাশে তোর হয়না ঠাঁই
মাটিতে কতো পড়বি।
শ্রাবণের মেঘে যেন আজ
উঠোন হয়েছে কাদা,
যেন অবিরাম বৃষ্টির ঢল
মানছে না কোন বাঁধা।
ঘনকালো মেঘ শ্রাবণ দিনে
নীল আকাশে উড়ে,
রোদেলা দুপুরে হঠাৎ করে
বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে।
হে মুজিব তুমি বেঁচে আছো
মোঃ তাজুল ইসলাম সোহাগ
হে মুজিব তুমি বেঁচে আছো
তোমার হয়নি মরণ !
তোমার ভাষণ শুনে, মনে আজও-
জাগে শিহরন !
হে মুজিব তুমি বেঁচে আছো
তোমার হয়নি মরণ !
আজও শয়নে স্বপনে জাগরণে
শুনি তোমার কণ্ঠস্বরের ধ্বনি
তুমি ছিলে মহান নেতা-
অতি আপন জন।
হে মুজিব তুমি বেচে আছো
তোমার হয়নি মরণ !
অকুতোভয় ছিলে মুজিব
রেখেছ তুমি জাতির মান
প্রাণ দিয়ে তুমি গড়লে এ বাংলার
শ্রেষ্ঠ সিংহাসন।
হে মুজিব তুমি বেচে আছে-
তোমার হয়নি মরণ !
আগস্ট এলেই
মাহবুব-এ-খোদা
আগস্ট এলেই মনে পড়ে
বঙ্গবন্ধুর কথা,
বুকের ভেতর কেঁপে ওঠে
দুঃখ ব্যথা যথা।
আগস্ট এলেই আকাশ বাতাস
হয়ে ওঠে ভারি,
কুচক্রীদের ষড়যন্ত্র
জীবন নিলো কাড়ি।
আগস্ট এলেই ভেসে ওঠে
রক্তনদীর ধারা,
বত্রিশ নম্বর সেই বাড়িতে
প্রাণ হারালো যারা।
আগস্ট এলেই বিশ্বজুড়ে
ছড়িয়ে পড়ে শোক
তাই লিখে যায় কবির কলম
বঙ্গবন্ধুর শ্লোক।
বৃষ্টি জুড়ে নিনাদ
নাসরীনখান
বৃষ্টি নামের মিষ্টি মেয়ে
এলো আকাশ জুড়ে
ঠান্ডা পানির ঝাপটা ধেয়ে
বাতাসটা বেশ ফুরফুরে।
ভিজতে মানা কেমন হঠাৎ
বজ্রপাতের নিনাদ
ভয়ে! তাই ঘরের কোণে
জানালার বাইরের স্বাদ!
এমন কেন যায়না ছোঁয়া
তোমার রুপের ডালা
মনটা আমার ভীষণ খারাপ
গাঁথেনা সুরের মালা।
আগের মতন আপন করে
বৃষ্টিকে না কেউ পাই
প্রতিদিনই বজ্রপাতে
নিয়ছে অনেক মৃত্যু ঠাঁই।
গাঁয়ের বঁধু
নূর মোহাম্মদ
কলসি কাংঙ্খে গাঁয়ের বঁধু
জল আনিতে যায়
ষোড়শীর রুপ দেখিয়া সবে
করে যে হায় হায়।
কলসি কাংঙ্খে রাস্তা দিয়ে
যাচ্ছে গাঁয়ের বঁধু
অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে
নিরব থাকি শুধু।
কলসি কাংঙ্খে গাঁয়ের বঁধু
যায়সে অনেক দূর
ভেসে উঠে রাখালিয়ার
মোহন বাঁশির সুর।
গ্রামের বঁধু সহজ সরল
সহজ ভাবে মিশে
বেঁচে থাকুক সবার ঘরে
আর সে ধানের শিষে।
আঁকা বাঁকা মেঠোপথে
জল আনিতে যায়
বেঁচে থাকুক গাঁয়ের বঁধু
সবুজ এ বাংলায়।
মাটির সুর
লুৎফুর রহমান চৌধুরী
মায়ার ঘর ছেড়ে পাখি
চলে গেছে দূরে
আমি তাকে ডাকি ওগো
কষ্টের সুরে সুরে।
টিনের ছালে বৃষ্টি পড়ে
ফোঁটা ফোঁটা হয়ে
মনটা আমার সারাক্ষণ
কাটে ভয়ে ভয়ে।
রংধনু সাজে সাত রঙে
আকাশের ঐ গায়ে
তাহার পানে চেয়ে থাকি
বসে ভাঙা নায়ে।
সুরে সুরে ডাকে আমায়
রাধা রাধা বলে
মন মূযুরী নৃত্য করে
পাত্রে রাখা জলে।
রঙ পেপারে নক্সা আমি
তুলি দিয়ে আঁকি
আজও স্বপ্ন হয়নি পূরণ
রয়ে গেছে বাকি।
পিপীলিকা
সনথ রায়
ক্ষুদ্র দেহের সমাবেশে
স্বপ্ন আকাশ ঝড় ।
গড়বে তারা গাছের চুড়ায়
মস্ত বাড়ি বড়ো ।
একবার দুইবার হাজারবার
চেষ্টা করে তারা ।
সফল তাদেরকে হতেই হবে
পথের কাটা কারা ।
সবার মধ্যে একতা নিয়ে
একত্রিত সাড়া ।
একের বিপদে অন্য সদা
দাড়িয়ে থাকে খাড়া ।
পিপীলিকা প্রাণী ক্ষুদ্র হলেও
পরিশ্রমী ওরা ।
ক্ষুদ্র হলেও বৃহতের স্বপ্ন
রাখুক জগৎ সারা ।
পাট মৌসুম
মনিরুল ইসলাম দোলা
এখন গাঁয়ের ডোবা নালা
পুকুর নদী খালে,
পাটের জাগে, আঁশ ছড়ানো
চলছে তালে তালে।
পাটের মৌসুম এইতো এখন
আনন্দে সব মাতে,
আঁশ ছড়ানোর ঘুম পড়েছে
গল্প চাঁদনী রাতে।
দিনে সবে ব্যস্ত কাজে
শ্লোক রাতের বেলা,
এমনি চলে গাঁয়ের চাষির
মৌসুম জুড়ে খেলা।
আগস্ট এলেই
সাইদুল ইসলাম সাইদ
আগস্ট এলেই কষ্ট গুলো,নতুন করে জাগে,
চুপকরে রয় ইচ্ছে সবার,মনটা শুধু রাগে।
কে বা জানত আগস্ট মাসেই,মুজিব যাবে চলে।
লাখো জনতার চোখের বৃষ্টি,বুক ভাসাবে জলে।
আগস্ট এলেই মনের মাঝে,ব্যথার ঝড় উঠে,
আবার কখন কোন অভাগীর,কপালে যায় জুটে।
কপাল খারাপ তাদের তো নয়,একটু ভেবে দেখো।
এখন কি ভাই বেশ সুখেতেই? বেশ আরামে থেকো।
বীরের মতন লড়াই করার,সাহস ছিল তার।
এমন বীরের পুরুষ এখন,পাবে না ভাই আর।
বুকটা ভরা সহজ ছিল তার,ভয় পেতে না কিছু।
গর্জে উঠেন অন্যায় দেখে,ছুটে তাদের পিছু।
এখন বুঝবে সবে হাড়ে হাড়ে,হারিয়ে গেছে হীরা।
কথায় কাজেই বড্ড ফারাক,দিবে অনেক কিরা।
তাই বলে যাই সময় থাকতে,কেউ করুনা হেলা।
হারিয়ে গেলেই খুঁজতে তোমার,চলে যাবেই বেলা।
কুলহারা এক পথিক
মমতা মজুমদার
আমার ছোট্ট আঁচল তলে দুঃখ খেলা কহরে
অশ্রু ঝরে হৃদ মাঝারে বিষাদ মনের ঘরে!
সুখ সয় না দুঃখের ভিড়ে দুঃখ কুঁড়ে কুঁড়ে
এক জীবনে সারাটা ক্ষণ সঙ্গ দেয় সে পুড়ে।
প্রেমের স্রোতে তরী ভাসে দুঃখের স্রোতে মন
নীল নয়না ক্ষণে ক্ষণে ভাসছে যে সারাক্ষণ।
দুঃখ আমায় রাত দুপুরে নিচ্ছে স্মৃতির চরে
শুষ্ক ভিটায় জ্বলছে অনল জীবন নদের তরে।
কারে শুধাই দুঃখ আমার দেখি সবার ঘরে
মেঘডুবিতে মেঘের ছায়া মন পুড়েছে মরে।
দুঃখে দুঃখে কাটছে কেউ প্রেম সমুদ্রে নেমে
আমার দুঃখ শুনতে একপক্ষী গেল না থেমে।
এপার ওপার দুই পার খুঁজি দুঃখ কারে কই
ভাগ্য দোষে জনম দুঃখী পাইনা কোথাও সই।
কুলহারা এক পথিক আমি ভাবি একাই বসে
দুঃখ কি এই কপাল জুড়ে লিখেছে বিধি কষে?
কেউ শুনেনা, কেউ নেয় না, দুঃখগুলোর ভাগ
শত দুঃখে দুঃখী সবাই সুখের পিঠে যে দাগ।
দুঃখ নিয়ে ফিরলাম নীড়ে দুঃখের মাঝে হাসি
দুঃখ গলে পড়েই আমি বাজাবো সুখের বাঁশি।
মৃতের জবানবন্দি
নবী হোসেন নবীন
মৃত বলে যারা মোরে করে অবহেলা
দেখেনি তারা আমার অলৌকিক খেলা।
কবর থেকেও আমি দিতে পারি ভোট
মামলার আসামী হয়ে ঘুরে যাই কোর্ট।
মরে গিয়ে আমি আজ হয়েছি আগুন
আমার শক্তি এখন বেড়েছে দ্বিগুন।
ভেব না আমায় শুধু মৃত এক শব
আমি সব চোখে দেখি কানে শুনি সব।
সাক্ষীর ঐ কাঠগড়ায় দাঁড়াব যেদিন
সেই দিন ভণ্ড তোরা পাবে না জামিন।
ভালোবাসার ফাঁদ
মোঃ দিদারুল ইসলাম
মেকি ভালোবাসার পসরা সাজিয়ে
পরিচিতি চাও মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে,
আবেগ আর ছলনা বেচাকেনার সিন্ডিকেটে
নিজেকে মস্ত সফল ভাবো হে ধূর্তবাজ।
তোমার নোনা জলের প্রেমের সুইমিংপুলে
প্রায়শই বিনা টিকেটে হাবুডুবু খেয়ে
হায়! বেড়েছে আমার ব্লাড প্রেসার,
দেরিতে হলেও ঠিকই বুঝে গেছি আমি আজ।
ইনিয়ে-বিনিয়ে আবেগ জড়ানো কথামালায়
নতুন কাউকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলো,
পুরাতন তোমার কাছে চরম অবহেলিত
আমি আজ এই অবেলায় টের পেয়েছি ঢের।
আহা! ভালোবাসার লেনাদেনায়-
নিজেকে পাক্কা অভিনেতা মনে করো,
তাইতো উপর দিয়ে হাত বাড়িয়ে
স্বার্থের টানাপোড়েনে নীচ দিয়ে ল্যাং মারো।
নিজেকে বিশ্বপ্রেমিক ভাবো!
তোমার ভেতরে প্রেম নয়, ছলনার নহর,
একদিন সেই নহরের তোড়ে ভাসতে ভাসতে
হে ঠকবাজ, তুমিই হবে দেশান্তর।
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা
কনক কুমার প্রামানিক
স্বপ্নের এক ফেরিওয়ালা-
বাড়ি বাড়ি স্বপ্নের ফেরি করি,
স্বর ভাঙা গলায় হাঁকি অবিরাম
স্বপ্ন বেচাকেনায় জীবনটা গড়ি।
স্বপ্ন নিবেন ! স্বপ্ন !
কতশত রঙে রাঙানো রঙিন স্বপ্ন,
সুখ-দূঃখ, হতাশা-বেদনা ভরা ধূসর স্বপ্ন
বিলাসী বাহারীর সাথে আছে নিম্ন।
স্বপ্ন নিবেন ! স্বপ্ন !
সস্তায় দিয়ে যাবো আছে কয়েক মুহুর্ত,
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে
দিবসে বিলীন হয়ে ওরা হবে বিমূর্ত।