যুগের ছড়া


যুগের ছড়া

বহুরূপী হেমন্ত

জাহাঙ্গীর চৌধুরী 


কার্তিকের দেশজুড়ে বহিতেছ 
মৃদু শীতের বাতাস। 
তরুলতায় অশনি সংকেত 
পত্র ঝরার আভাস। 
কৃষকের মুখে হাসি রাশি রাশি 
ধান হয়েছে সোনালী। 
ধান কাটে রূপালী রোদ মাথায় 
গীত গায় ব্যাথা ভুলি।
কৃষাণিরা ব্যস্ত সকাল বিকাল 
ধান তুলতে গোলায়।
রকমারি পিঠা বানিয়ে সবাই 
প্রভাতে নাশতা খায়।
চারিদিকে গায় নবান্নের গান 
বাঙালির সংস্কৃতি। 
রাস্তার ধারে পিঠাপুলির ধূম
কিনে খেয়ে করে ফূর্তি। 
আসল বহুরূপী হেমন্তকাল
রবিশস্যের উচ্ছ্বাস। 
কৃষক ক্ষেতের আলে বসে ফেলে 
চিত্ত সুখের নিশ্বাস।

গাজার শিশু বাঁচাও প্রভু

ইলিয়াছ হোসেন


ইসরায়েলের নিষ্ঠুর ঘাতক
গাজায় হামলা করছে,
মুহুর্মুহু ন্যাক্কার হামলায়  
নিষ্পাপ শিশু মরছে।

শিশুর ক্ষত শরীর দেখে
ঝরছে চোখের জল,
কবে হামলা বন্ধ করবে
নিষ্ঠুর ঘাতকের দল।

প্রতিশোধের নেশায় ঘাতক
ধ্বংসের খেলা খেলছে,
নির্বিচারের তীব্র হামলা
গাজায় ডানা মেলছে।

ঘাতক সদা মারছে শিশু
কাঁপছে না যে বুক,
অবিরত হামলা করে
গাজায় বাড়াচ্ছে দুখ।

গাজায় ঘৃণ্য ধ্বংসের খেলা
দেখতে চাই না কভু,
গাজার শিশু রক্ষা করো
ওগো মহান প্রভু।

বন্ধু আমার 

শাহীন  খান 


বন্ধু আমার প্রজাপতি দোয়েল কোয়েল টিয়ে
ভালোবাসি নিরবধি মনটা আমার  দিয়ে।

আরো আছে ময়না চড়ুই ফিঙে কাকাতুয়া
বাঘ ও হরিণ হাতি ঘোড়া শেয়াল হুক্কাহুয়া। 

বাদুর কোকিল হাঁস ও মুরগি ঘুঘু পেঁচাটাও
আমার বন্ধু ডাহুক পাখি এবং ছানারাও।

ফড়িং ঝিঁঝি গুঁইসাপ বেজি সাপও আমার মিতা
লতাপাতা বৃক্ষ শস্য মিষ্টি ফল আর তিতা।

ফুলের সৌরভ জোনাক পোকা ভোরের দখিন হাওয়া
সুনীল আকাশ মেঘলা বিকেল কুটির ছনে ছাওয়া। 

আষাঢ় শ্রাবণ সুখের প্লাবন বৃষ্টি রোদের খেলা
রংধনু রং বন্ধু আমার বন্ধু সাঁঝের বেলা। 

মাঠঘাট প্রান্তর বাজার বন্দর  কিংবা নদী বন
বিস্তৃর্ণ ক্ষেত সবুজ যতো আমার আপনজন।

সাগর পাহাড় মরু গিরি সূর্যও চাঁদ তারা
বন্ধু আমার পথের শিশু দুখি আছো  যারা। 

বন্ধু আমার মা ও বাবা বোন ও সহোদর
জগৎ জুড়ে আলোয় ভরে আমার এ অন্তর!

সব নিয়ে এই বেঁচে থাকা নিত্য প্রতিদিন
আমায় করে সব বন্ধুরা এতটা রঙিন।

শীত দিয়েছে উঁকি 

মোঃ দিদারুল ইসলাম 


ঋতু চক্রের আবর্তনে
শীত দিয়েছে উঁকি,
নরম কাঁথায় গা জড়িয়ে   
পড়ে খোকা-খুকি।

ঘরে ঘরে পিঠা-পুলি
খেতে ভারি মিষ্টি,
মা-চাচিরা কাজে ব‍্যস্ত
চির চেনা কৃষ্টি।

ঘাসের ডগায় শিশির কণা
দেখায় মুক্তোর মতো,
গায়ে মাখে সকালের রোদ
ছেলে- বুড়ো যতো।

খেজুর গুড়ের ভাপা পিঠার
ঘ্রাণে চারপাশ ভাসে,
দাদির হাতের পিঠা খেয়ে 
খোকা-খুকি হাসে।

ইঁদুর বিড়াল বাঘ মামা

বিজন বেপারী


ইঁদুর হাসে দাঁত কেলিয়ে
পেয়ে ধানের গন্ধ
কনকনে শীত কাঁপে কোকিল
হারায় গানের ছন্দ।

বাঘ মামা আজ বেজায় খুশি
খেয়ে তাজা গোস্ত
বিপদ দেখে সাপ-বেজিতে
গড়ে মধুর দোস্ত।

বিড়াল মাসী ঘুমিয়ে থাকে
সকাল বিকাল রাত্রি
ঘোড়া টানে মজার গাড়ি
বাবুসাব হয় যাত্রী।

সাদা বকের মাথায় ঝুঁটি
লম্বা তাহার ঠ্যাং
বৃষ্টি জলে সুর ধরেছে
জমির কোলা ব্যাঙ।

তখন মনে প্রশ্ন রেখো

-সোহাগ রেজা


এ পৃথিবীর রঙ্গ মেলায়; সবাই বাঁধা বিনে সুতায়
অপরূপ মুগ্ধতায়; আর ডেকো না চোখের ভাষায়
সব বাঁধনকে ছিন্ন করে; হয়তো যাবে অনেক দূরে
কালক্রমে একে-একে; হারিয়ে যাবে অজানাতে
নশ্বর এই পৃথিবীর বুকে; সকল কিছু ফুরিয়ে যাবে
বোঝেনা এই মনটা শুধু; মনের চাওয়া পড়েই রবে!
হৃদয় ভরা উৎফুল্লতায়; অসীম প্রেম-ভালবাসায় 
অচেনা কোন গভীরতায়;মনটা কেন ছুঁয়ে যেতে চায়!
জীবনের বাকিটা সময়; কাছে পেতে চায় যে জন
মায়াভরা আহ্বানে; বাঁধা পড়ে যায় সে প্রতি ক্ষণ ! 

কত শত গল্পগাথা; আবেগ মাখা স্মৃতির পাতায় !
অনুভূতির সুপ্ত ডালি; জেগে থাকা সে প্রতীক্ষায়!
শুভ্র সেই মেঘের ভেলা; মনের চোখে ভেসে যায়
অনুভূতির প্রকাশ যেন; ফের তোমাকে খুঁজে পায়।
সব বেলাতে কষ্ট এমন; সত্যি যেদিন হারিয়ে যাবে
তখন মনে প্রশ্ন রেখো; সত্যি কি সেই সুখটা পাবে?

শীতের পিঠা

সেলিম আহমদ কাওছার 


শীত কালে পিঠা পুলির 
মেলা বসে যেই
নানা জাতের পিঠা দেখে
মন ভরে সেই। 

খেজুর রসের ভাপা পিঠা
নারিকেল দিয়ে চিতই
ডালের গুঁড়ার বড়া নিয়ে
চলে খুব হইচই। 

পাটিসাপটা ভারি মজা 
খেতে লাগে বেশ
তেলের পিঠা আরও মজা
নরম সন্দেশ। 

হেমন্তের নবান্ন মানেই
 পিঠার ধুমধাম
পিঠা নিয়ে ব্যস্ত তখন
শহর, পাড়া, গ্রাম।

হরতাল

মাহবুব-এ-খোদা 


হরতাল অবরোধ কেড়ে নেয় প্রাণ
বাতাসের বেগে বয় রক্তের যে ঘ্রাণ। 
কোটি টাকা অপচয় ব্যবসায় ক্ষতি 
চলাচলে বিঘ্ন ঘটে পাল্টে যায় গতি।
কর্মহীনে পড়ে থাকে শ্রমিকের কাজ, 
অর্থাভাবে বেড়ে যায় মানুষের লাজ।
একটানা হরতাল ডেকে আনে ধ্বংস 
প্রতিরোধে দ্বন্দ্ব বেঁধে শেষ হয় বংশ।
অধিকার  প্রতিষ্ঠায় হরতাল ডাকা হয়, 
সুখে থাকে নেতা-নেত্রী জনতার ক্ষয়।

গর্জে ওঠো

মোঃ দেলোয়ার হোসেন 


অবলীলায় গায়ের জোরে 
মারছো মানুষ তিলেতিলে,
মরছে পুরুষ নারী শিশু 
দয়ামায়া নাই কি দিলে।

ইসরায়েলের ইহুদিরা
ধ্বংস নিলায় উঠলো মেতে,
প্রতিবাদী কলম ধরো
পারেনা যেন্ সামনে যেতে। 

ফিলিস্তিনির স্বজাতিরা
মরছে কেমন ধুঁকে ধুঁকে, 
মুসলিম বলে দাবী করো
প্রতিবাদ নাই তোমার মুখে। 

জালিম বাজের অত্যাচারে
আর কতো কাল থাকবে ঘরে,
সময় থাকতে না রুখিলে
আসবে বিপদ তোমার পরে।

বিশ্ব মুসলিম গর্জে ওঠো
জালিমের হাত ভেঙে দিতে,
এমন করে আর কেউ যেনো 
পারেনা প্রাণ কেঁড়ে নিতে।


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন

তানকা/স্বপন শর্মা