যুগের ছড়া
❑বহুরূপী হেমন্ত
জাহাঙ্গীর চৌধুরী
কার্তিকের দেশজুড়ে বহিতেছমৃদু শীতের বাতাস।তরুলতায় অশনি সংকেতপত্র ঝরার আভাস।কৃষকের মুখে হাসি রাশি রাশিধান হয়েছে সোনালী।ধান কাটে রূপালী রোদ মাথায়গীত গায় ব্যাথা ভুলি।কৃষাণিরা ব্যস্ত সকাল বিকালধান তুলতে গোলায়।রকমারি পিঠা বানিয়ে সবাইপ্রভাতে নাশতা খায়।চারিদিকে গায় নবান্নের গানবাঙালির সংস্কৃতি।রাস্তার ধারে পিঠাপুলির ধূমকিনে খেয়ে করে ফূর্তি।আসল বহুরূপী হেমন্তকালরবিশস্যের উচ্ছ্বাস।কৃষক ক্ষেতের আলে বসে ফেলেচিত্ত সুখের নিশ্বাস।❑গাজার শিশু বাঁচাও প্রভু
ইলিয়াছ হোসেন
ইসরায়েলের নিষ্ঠুর ঘাতকগাজায় হামলা করছে,মুহুর্মুহু ন্যাক্কার হামলায়নিষ্পাপ শিশু মরছে।শিশুর ক্ষত শরীর দেখেঝরছে চোখের জল,কবে হামলা বন্ধ করবেনিষ্ঠুর ঘাতকের দল।প্রতিশোধের নেশায় ঘাতকধ্বংসের খেলা খেলছে,নির্বিচারের তীব্র হামলাগাজায় ডানা মেলছে।ঘাতক সদা মারছে শিশুকাঁপছে না যে বুক,অবিরত হামলা করেগাজায় বাড়াচ্ছে দুখ।গাজায় ঘৃণ্য ধ্বংসের খেলাদেখতে চাই না কভু,গাজার শিশু রক্ষা করোওগো মহান প্রভু।❑বন্ধু আমার
শাহীন খান
বন্ধু আমার প্রজাপতি দোয়েল কোয়েল টিয়েভালোবাসি নিরবধি মনটা আমার দিয়ে।আরো আছে ময়না চড়ুই ফিঙে কাকাতুয়াবাঘ ও হরিণ হাতি ঘোড়া শেয়াল হুক্কাহুয়া।বাদুর কোকিল হাঁস ও মুরগি ঘুঘু পেঁচাটাওআমার বন্ধু ডাহুক পাখি এবং ছানারাও।ফড়িং ঝিঁঝি গুঁইসাপ বেজি সাপও আমার মিতালতাপাতা বৃক্ষ শস্য মিষ্টি ফল আর তিতা।ফুলের সৌরভ জোনাক পোকা ভোরের দখিন হাওয়াসুনীল আকাশ মেঘলা বিকেল কুটির ছনে ছাওয়া।আষাঢ় শ্রাবণ সুখের প্লাবন বৃষ্টি রোদের খেলারংধনু রং বন্ধু আমার বন্ধু সাঁঝের বেলা।মাঠঘাট প্রান্তর বাজার বন্দর কিংবা নদী বনবিস্তৃর্ণ ক্ষেত সবুজ যতো আমার আপনজন।সাগর পাহাড় মরু গিরি সূর্যও চাঁদ তারাবন্ধু আমার পথের শিশু দুখি আছো যারা।বন্ধু আমার মা ও বাবা বোন ও সহোদরজগৎ জুড়ে আলোয় ভরে আমার এ অন্তর!সব নিয়ে এই বেঁচে থাকা নিত্য প্রতিদিনআমায় করে সব বন্ধুরা এতটা রঙিন।❑শীত দিয়েছে উঁকি
মোঃ দিদারুল ইসলাম
ঋতু চক্রের আবর্তনেশীত দিয়েছে উঁকি,নরম কাঁথায় গা জড়িয়েপড়ে খোকা-খুকি।ঘরে ঘরে পিঠা-পুলিখেতে ভারি মিষ্টি,মা-চাচিরা কাজে ব্যস্তচির চেনা কৃষ্টি।ঘাসের ডগায় শিশির কণাদেখায় মুক্তোর মতো,গায়ে মাখে সকালের রোদছেলে- বুড়ো যতো।খেজুর গুড়ের ভাপা পিঠারঘ্রাণে চারপাশ ভাসে,দাদির হাতের পিঠা খেয়েখোকা-খুকি হাসে।❑ইঁদুর বিড়াল বাঘ মামা
বিজন বেপারী
ইঁদুর হাসে দাঁত কেলিয়েপেয়ে ধানের গন্ধকনকনে শীত কাঁপে কোকিলহারায় গানের ছন্দ।বাঘ মামা আজ বেজায় খুশিখেয়ে তাজা গোস্তবিপদ দেখে সাপ-বেজিতেগড়ে মধুর দোস্ত।বিড়াল মাসী ঘুমিয়ে থাকেসকাল বিকাল রাত্রিঘোড়া টানে মজার গাড়িবাবুসাব হয় যাত্রী।সাদা বকের মাথায় ঝুঁটিলম্বা তাহার ঠ্যাংবৃষ্টি জলে সুর ধরেছেজমির কোলা ব্যাঙ।❑তখন মনে প্রশ্ন রেখো
-সোহাগ রেজা
এ পৃথিবীর রঙ্গ মেলায়; সবাই বাঁধা বিনে সুতায়অপরূপ মুগ্ধতায়; আর ডেকো না চোখের ভাষায়সব বাঁধনকে ছিন্ন করে; হয়তো যাবে অনেক দূরেকালক্রমে একে-একে; হারিয়ে যাবে অজানাতেনশ্বর এই পৃথিবীর বুকে; সকল কিছু ফুরিয়ে যাবেবোঝেনা এই মনটা শুধু; মনের চাওয়া পড়েই রবে!হৃদয় ভরা উৎফুল্লতায়; অসীম প্রেম-ভালবাসায়অচেনা কোন গভীরতায়;মনটা কেন ছুঁয়ে যেতে চায়!জীবনের বাকিটা সময়; কাছে পেতে চায় যে জনমায়াভরা আহ্বানে; বাঁধা পড়ে যায় সে প্রতি ক্ষণ !কত শত গল্পগাথা; আবেগ মাখা স্মৃতির পাতায় !অনুভূতির সুপ্ত ডালি; জেগে থাকা সে প্রতীক্ষায়!শুভ্র সেই মেঘের ভেলা; মনের চোখে ভেসে যায়অনুভূতির প্রকাশ যেন; ফের তোমাকে খুঁজে পায়।সব বেলাতে কষ্ট এমন; সত্যি যেদিন হারিয়ে যাবেতখন মনে প্রশ্ন রেখো; সত্যি কি সেই সুখটা পাবে?❑শীতের পিঠা
সেলিম আহমদ কাওছার
শীত কালে পিঠা পুলিরমেলা বসে যেইনানা জাতের পিঠা দেখেমন ভরে সেই।খেজুর রসের ভাপা পিঠানারিকেল দিয়ে চিতইডালের গুঁড়ার বড়া নিয়েচলে খুব হইচই।পাটিসাপটা ভারি মজাখেতে লাগে বেশতেলের পিঠা আরও মজানরম সন্দেশ।হেমন্তের নবান্ন মানেইপিঠার ধুমধামপিঠা নিয়ে ব্যস্ত তখনশহর, পাড়া, গ্রাম।❑হরতাল
মাহবুব-এ-খোদা
হরতাল অবরোধ কেড়ে নেয় প্রাণবাতাসের বেগে বয় রক্তের যে ঘ্রাণ।কোটি টাকা অপচয় ব্যবসায় ক্ষতিচলাচলে বিঘ্ন ঘটে পাল্টে যায় গতি।কর্মহীনে পড়ে থাকে শ্রমিকের কাজ,অর্থাভাবে বেড়ে যায় মানুষের লাজ।একটানা হরতাল ডেকে আনে ধ্বংসপ্রতিরোধে দ্বন্দ্ব বেঁধে শেষ হয় বংশ।অধিকার প্রতিষ্ঠায় হরতাল ডাকা হয়,সুখে থাকে নেতা-নেত্রী জনতার ক্ষয়।❑গর্জে ওঠো
মোঃ দেলোয়ার হোসেন
অবলীলায় গায়ের জোরেমারছো মানুষ তিলেতিলে,মরছে পুরুষ নারী শিশুদয়ামায়া নাই কি দিলে।ইসরায়েলের ইহুদিরাধ্বংস নিলায় উঠলো মেতে,প্রতিবাদী কলম ধরোপারেনা যেন্ সামনে যেতে।ফিলিস্তিনির স্বজাতিরামরছে কেমন ধুঁকে ধুঁকে,মুসলিম বলে দাবী করোপ্রতিবাদ নাই তোমার মুখে।জালিম বাজের অত্যাচারেআর কতো কাল থাকবে ঘরে,সময় থাকতে না রুখিলেআসবে বিপদ তোমার পরে।বিশ্ব মুসলিম গর্জে ওঠোজালিমের হাত ভেঙে দিতে,এমন করে আর কেউ যেনোপারেনা প্রাণ কেঁড়ে নিতে।
Tags:
ছড়া