যুগের কবিতা
শেকলবন্দী মানবতা
রুশো আরভি নয়ন
লৌহ কপাট ছিন্ন করে আয়রে তরুণ আপন দ্বারে
দেখরে ওরা কেমন করে হিংস্র থাবায় মানুষ মারে।
যুগ পেরিয়ে যুগান্তরে বসছে চেপে কাকটি ঘাড়ে
দিগ্ভ্রান্ত দিক হারিয়ে পশ্চিমা নাও বাঁধছে পাড়ে।
ধ্বংস সেথায় শীর্ণ গাঁয়ে রৌদ্রে পোড়া শিশুর পায়ে
অভিশাপ আজ অত্যাচারীর উল্লসিত নিরস নায়ে।
ধীরতার ঐ বাঁধটি ভেঙে ছুঁয়েছে ঠোঁট গরল চায়ে
লড়তে হবে তরুণ এবার কোমল শিশুর হাসির দায়ে।
বারুদমাখা কামান বলে খোদার ঘরে আগুন জ্বালে
রক্তনদীর প্রবল ধারায় হানরে আঘাত শকুন গালে।
শেকলবন্দী মানবতা ফের পিশাচের অগ্নি ডালে
ঝাণ্ডাটাকে ধর উঁচিয়ে বিঁধুক বুলেট বুকের জালে।
❑
পরম শূন্য
নবী হোসেন নবীন
যার কিছু নেই তার কিসের হারাবার ভয়!
শূন্য হতে শূন্য চলে গেলেও তো শূন্যই রয়।
আপন চোখের জলে
বালির বালিশ ভিজাতে পারে না যে নদী
চৈত্রের খরা আর শ্রাবণের ধারা
পৌঁছাতে পারে না তার চোখে পাতা অবধি।
পরম শূন্য যার চরম প্রাপ্তি
ঐশ্বর্যে নেই তার কোনো তৃপ্তি।
❑
বিভোরতা
আনজানা ডালিয়া
জলের আরশীতে দেখেছি তোমায়
হৃদয়ের মমতায় প্রেমকে প্লাবিত করতে।
রাগের ভাঁজে মনকে বস করেছো
আমার আমিত্বকে ছন্দের সুর দিয়েছো।
পেয়েছি উন্মুত্ততায় ঝুরিঝুরি আহ্বান
অচল পয়সার খোলস ভেঙ্গে হয়েছো ইচ্ছেদুয়ারী।
ধুতরা ফুলকে বানিয়েছো তাজা গোলাপ
কল্পনার জগত তোমার মহাবিশ্বকে পাশে রাখে
তাতে আমি এক ক্ষুদ্র বকুল মাত্র,
ভেসে যাওয়া বকুল
প্রায়শ্চিত্ত শেষে তুমি আবার এ ধরায় মহামানব
আত্মার সাথে আত্মার হয় বিভোরতা।
❑
ভেসে যাই অনন্ত মহাকালে
জিৎ মন্ডল
বেঁচে থাকাটা বড়ই কঠিন
বেঁচে থাকার আশায়
জরাজীর্ণ এ ধরায়
বাঁচিয়ে রাখতে হয়
ক্ষুধা ও দারিদ্রময়
অপূর্ণ এই জীবন।
মোহ মরিচিকার পিছে
ছুটতে ছুটতে এই জীবন
একদিন অকস্মাৎ বলে ওঠে
মিছে স্বপ্ন, মিছে আশার
ঘটুক পূর্ণ অবসান।
ভেসে যাই এবার নাহয়
অনন্ত মহাকালের স্রোতে ।