❑ শনিবার ❑ ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ইংরেজি ❑ ০৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
যুগের ছড়া
❑
খাদ্য পণ্য
ইলিয়াছ হোসেন
খাদ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে
কিনতে লাগে ভয়,
যত টাকার বাজার করি
ব্যাগের তলায় রয়।
পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া
চড়া ডিমের দাম,
চাউল ডাউল আলু চিনি
কিনতে ঝরে ঘাম।
মাছ মাংসের দোকানে কভু
ভয়ে নাহি যাই,
শাক সবজিতে কোনো মতে
প্রতিদিন ভাত খাই।
যুদ্ধবিগ্রহে বাড়ছে দাম
সকল খাদ্য পণ্যে,
কেনো আমি কষ্ট পাবো
বর্বর যুদ্ধের জন্যে।
বাজার থেকে খাদ্য পণ্য
কিনতে চাই ব্যাগ ভরে,
সরকার যেন পণ্যের দাম
সহনযোগ্য করে।
❑
আপন মানুষ কই
রফিকুল ইসলাম
মানুষ কেবল স্বার্থ খোঁজে
সম্পর্কটাই ফাঁকি,
নিজের মনে হামবড়া ভাব
অন্যেরা সব মেকি।
তুমি যারে আপন ভাবো
ভাবনা কি তার একই,
পানের থেকে চুন খসলেই
হিসাব মিলাও কষি।
আলোর উপর আলো দেখি
নিচে তারই অন্ধকার,
আপন আপন করো যারে
অনুভবে সে অনাহার।
আমার মাথা অনেক উঁচু
তোমার মাথা নিচু,
উঁচু নিচুর সম্পর্কটা আর
রইল বাকী কিছু?
❑
ধান কাটা
ফেরদৌসী থানম রীনা
হেমন্তে নতুন ধানে ভরেছে ক্ষেত
কৃষকের মুখে হাসি,
নতুন ধান কেটে ভরবে গোলা
আনন্দ রাশি রাশি।
নতুন ধানের বাতাসে ঢেউ খেলে
দেখতে লাগে অপূর্ব,
পাকা ধান কাটে আনবে ঘরে
গোলা হবে পরিপূর্ণ।
ধান কাটে আর গান গায়
কৃষক মনের সুখে,
সারাক্ষণ যেন খুশির জোয়ার
কৃষাণ -কৃষাণীর মুখে।
নতুন ধান কাটতে কৃষকের
হয় না কোন কষ্ট,
ক্ষেতে নতুন ধান পেয়ে
কৃষক মন সন্তুষ্ট।
নতুন চালে রাঁধবে ভাত
খাবে প্রাণ জুড়িয়ে,
নতুন চালের পিঠা পায়েস
খাবে সবাইকে নিয়ে।
❑
প্রতিবাদী কেহ নই
জাহাঙ্গীর চৌধুরী
যবে যেথা যাই শুনতে পাই
সত্য বলার মানুষ নাই।
কাকে বলবো দুঃখের কথা
সবার মুখে আজ খাইখাই।
আমরা যারা সোজাসাপটা
প্রতিবাদী কেহু নই।
গায়ের চামড়া খুলে নিলে
ফোটে না যে কথার খই।
সবাই কিন্তু স্বস্তির পাগল
স্বস্তি আনার মুরোদ কই ?
বাদপ্রতিবাদ না থাকিলে
পাকা ধানে দিবে মই।
কালের ঘরে অকাল ঢুকবে
দুঃখ কষ্টের বোঝা লই।
হররোজ তখন শুনতে হবে
জিয়ন মরণ এর হইচই।।
❑
গাঁয়ের পথ
এম. আবু বকর সিদ্দিক
এসো বন্ধু গাঁয়ের পথে
জানাই নিমন্ত্রণ,
একটুখানি হাঁটলে তোমার
শান্ত হবে মন।
গেঁয়ো পথের দু'পাশ জুড়ে
বৃক্ষ সারি সারি,
সবুজ পাখায় বাতাস করে
তৃপ্তি মনোহারী।
গেঁয়ো পথের কোমল মাটি
যেন শীতল পাটি,
গামছা গায়ে নাঙ্গা পায়ে
করবে হাঁটাহাঁটি।
প্রভাত কালে ক্ষেত খামারে
ছুটে চলে চাষি,
তোমায় দেখে সালাম দেবে
মুখে মিষ্টি হাসি।
❑
অন্যরকম মেয়ে
সাইদুল ইসলাম সাইদ
একা একাই বেশি ভালো
থাকে সারাক্ষণ,
চাঁদের মত মানুষ পেলে
দিবে তাহার মন।
চাঁদ বলিতে সাদা শরীর
এমন কিন্তু নয়!
মনের ভেতর প্রভুর প্রেমে
সবসময় যে রয়।
রূপেগুণে যেমন তেমন
মনটা হবে ভালো,
অন্ধকারেও যাবে দেখা
মুছে যাবে কালো।
আশার মনের কথাগুলো
আজকে বলে যাই
মায়ায় ভরা মুখটি তাহার
চাঁদ মাখা যে তাই।
❑
ভেলকি
শাহীন খান
আহা একি তেলেসমাতি
ভেলকি দেখি রাতারাতি
আজ যেটার দাম চার
কাল হয়ে যায় বারো তের
পরশু সেটা হয় আঠের
তরশু সেটা ঘোড়া হয়ে
ফাল মারে বারবার!
গরীব ভোগে দাম আঘাতে
ঘুম আসে না নয়নপাতে
নাভিশ্বাসের গরম হাওয়ায়
ডুকরে কাঁদে মন
জীবন যাপন দুর্বিসহ
যায় কেটে যায় বাঁচার মোহ
বিধির কাছে চায় গো সে যে
শুভ্র সতেজ ক্ষণ!
❑
খোকন সোনা
মোঃ দিদারুল ইসলাম
ছোট্ট বাবা, খোকন সোনা
ছড়া ভালোবাসে,
রোজ সকালে ছড়া পড়ে
খিলখিলিয়ে হাসে।
ছড়ার ছন্দে খোকন সোনা
নাচে দু'হাত তুলে,
তাই না দেখে পোষা বিড়াল
আনন্দেতে দুলে।
ছড়ার বইয়ে পাকা আমের
ছবি দেখে চেয়ে,
খোকন সোনা বেজায় খুশি
আমটি মিছে খেয়ে।
পড়ার ফাঁকে খোকন সোনা
পুতুল নিয়ে খেলে,
মায়ের হাতের দুধমাখা ভাত
আনন্দেতে গেলে।
❑
মিষ্টি সকাল
গোলাপ মাহমুদ সৌরভ
রাত ফুরিয়ে সকাল হলো
গাছে ডাকে পাখি,
সূর্যের আলো মিষ্টি সকাল
খোল সবে আঁখি।
টিয়া ডাকে ময়না ডাকে
গায় সকালের গান,
হাসনা জবা শিউলি ফুটে
মন মাতানো ঘ্রাণ।
লাঙ্গল কাঁধে রাখাল ছুটে
গরু মহিষ মাঠে,
কৃষাণী বধূ যায় যে হেঁটে
কলসি নিয়ে ঘাটে।
❑
পদত্যাগ
মাহবুব-এ-খোদা
সাই আমলে খেলছে পেলে
পাইছে বিশ্বকাপ,
সেই খুশিতে লাজ হারিয়ে
করেছি দৌড়ঝাঁপ।
দেখছে দাদু রোনালদিনহো
তাই বেড়ে যায় বল,
পঞ্চকাপের গল্প দিয়ে
করছি কত ছল।
নেইমারের নাম মুখেই শুনি
ভাঙে পায়ের তল,
ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণে
যায় হারিয়ে বল।
কী যে খেলে আর্জেন্টিনা
হৃদয়ে দেয় চাপ!
ব্রাজিলের দল ছেড়ে দিলাম
করবেন আমায় মাফ।
❑
কেমন করে বলি
কনক কুমার প্রামানিক
আমার মনের কথাগুলো
কেমন করে বলি,
তোমার কাছে আসলে পরে
সবকিছু যে ভুলি।
বলতে চেয়েও পারি নাকো
কাঁপন লাগে গায়,
মুখের কথাও চেপে রাখি
কোন উপায় নাই?
কতই ভাবে বোঝায় তারে
ভালোবাসার কথা,
বৃথা রোদন শুধু আমার
বাড়ে কেবল ব্যথা।